জয়পুরহাটে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

প্রকাশিত: ০২ জুন ২০২২, ১০:৫২ এএম

চলতি ২০২১-২২ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে স্থানিয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এতে প্রায় ৩৮ হাজার বেল পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছে কৃষি বিভাগ। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সরকারের পাট জাত দ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতা মূলক করায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানী হিসেবে পাট কাটিকে ব্যবহার ও পাট চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া, পাট শাক হিসেবে বিক্রি করে সংসারে বাড়তি আয় এসব কারণে জেলার কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাট চাষ সফল করতে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে হাতে- কলমে চাষিদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সারের মজুদ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা সহ অন্যান্য কার্যক্রম।

বিগত দশ বছরে জেলায় পাট চাষের হিসাবে দেখা যায় একই ধারায় চলছে পাট চাষ কার্যক্রম। এর মধ্যেও দিন দিন পাট চাষে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্যকরা যাচ্ছে। বিগত দিনের পাট চাষের মধ্যে
রয়েছে ২০১১-১২ মৌসুমে ৩ হাজার ৫শ ৪৫ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৪ হাজার ২শ ৯৪ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৫৩ হাজার ৩শ ৮ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৮শ থেকে ১ হাজার ২শ টাকা মণ। ২০১২-১৩ মৌসুমে ৩ হাজার ২শ ৪২ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৩ হাজার ৩শ ৯৫ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার ১শ ১০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১২শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা মণ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৩ হাজার ৪শ ১৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অর্জিত হয় ২ হাজার ৮শ হেক্টর।

এতে পাট উৎপাদন হয়েছিল ২০ হাজার ৮শ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১ হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ৪ শ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ২ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯ শ ২৭ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১৫ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত , ২০১৬-১৭ মৌসুমে ২ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯১০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৯ হাজার ২ শ ৯১ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১৩ শ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত , ২০১৭-১৮ মৌসুমে ২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ১২০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪২ হাজার ৪ শ ৩২ বেল।

এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত, ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩ হাজার ৯৫ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়। উৎপাদন হয়েছে ৩৯ হাজার বেল পাট। এ বছর প্রতিমন পাট বিক্রি হয় ১২শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। ২০২০-২১ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হলেও অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এতে উৎপাদন হয় ৩৭ হাজার বেল পাট। এ বছর পাটের দাম ছিল সর্বোচ্চ আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৮শ টাকা মণ।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি ২০২১-২২ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এতে প্রায় ৩৮ হাজার বেল পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: