আটকের পর অস্ত্র উদ্ধারের দাবি পুলিশের, পরিবার বলছে নাটক

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২২, ০৪:০৮ পিএম

কামরুল হাসান নিরব, ফেনী থেকে: ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিমকে ঢাকার কাকরাইল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাঁর বাসভবন থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডিবি কর্মকর্তারা ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই ফেনী এনে তাঁর বাসভবনে অভিযান চালিয়ে পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়। তবে জসিমের মেয়ে ও স্ত্রীর অভিযোগ, পুলিশ গভীর রাতে অস্ত্র সঙ্গে করে এনে তাঁদের বাসায় উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে।

ফেনী সদর থানা সার্কেল এএসপি থোয়াই অং মারমা জানান, জসিমকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইল এলাকার বিজয়নগর টাওয়ার থেকে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। রাতে তাঁকে ফেনী নিয়ে আসা হয়। তার বাসায় অস্ত্র রয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিলে অভিযান চালিয়ে পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ও দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে অস্ত্র মামলায় জসিমকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা-তুজ জোহরা মুনার আদালতে সোপর্দ করলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর সম্ভাব্য বিক্ষোভ ও সহিংসতা মোকাবিলায় রাতেই পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেয়।

পরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ট্রাংক রোড, পাছগাছিয়া সড়ক ও তাকিয়া রোডে জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করে। অপরদিকে শহরের রামপুর এলাকায় বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। রাত ১০টার দিকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাকিয়া ও ট্রাংক রোডে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

রাত দেড়টার দিকে ফেনী থানার ওসি নিজামউদ্দিনসহ পুলিশ সদস্যরা জসিমের রামপুর সৈয়দবাড়ি সড়কের বাসায় অভিযান শুরু করে। জসিমের স্ত্রী লুৎফুন নাহার পারভিন ও মেয়ে শাঞ্জিতা আফরোজ পপি অভিযোগ করেন, পুলিশ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে সবার সামনে টেবিলের ড্রয়ারে পিস্তল রেখে উদ্ধারের নাটক শুরু করে। জসিমের চোখ বেধে রাখা হয় ।

জসিমের স্ত্রী ও মেয়ে এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফেনী থানার ওসি ও পপির মধ্যে তর্কবিতর্কের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ বাহার, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন, যুগ্ম সচিব আনোয়ার হোসেন প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, পুলিশ এ ঘটনা ঘটিয়ে মূলত বিএনপির আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।

এ ব্যাপারে ফেনীর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ট্রেনিংয়ে রয়েছেন জানিয়ে সদর সার্কেল এএসপি সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ফেনী থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, জসিমের বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তাঁর স্বীকারোক্তিতে। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে। সব অস্ত্রধারীই দাবি করে অস্ত্র তাঁর নয়। জসিমের পরিবারের দাবিও একই রকমের।

এদিকে যুবদল নেতা জসিমকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না। গতকাল এক বিবৃতিতে জসিমসহ গ্রেপ্তারদের সব মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তারা। নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: