৪ ছেলের বিরুদ্ধে বাবাকে ‘গুম’ করার অভিযোগ !

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২২, ০৬:৪৭ পিএম

সম্পত্তির জন্য মোহাম্মদ উল্যা (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে গুম করার অভিযোগ উঠেছে তার ছেলের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত চার ছেলে হলো- মাসুদ আলম, আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও উজ্জ্বল হোসেন। তাদের দাবি বাবা মোহাম্মদ উল্যা মানসিকভাবে অসুস্থ। এ জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কোথায় আছেন তিনি এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না তারা। মোহাম্মদ উল্যাহ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের স্টিল ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা। মৃত অজি উল্যার ছেলে।

এদিকে মোহাম্মদ উল্যা অসুস্থ নন বলে দাবি তার বৃদ্ধ মা হালিমা খাতুন, বোন ফাতেমা খাতুন ও মেয়ে রাবেয়া সুলতানার। তাকে ফিরে পেতে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে স্থানীয়রা রায়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু থানা পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করেনি। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাটি তদন্ত চলছে।

অন্যদিকে শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে মোহাম্মদ উল্যাকে অমানবিক নির্যাতন ও রাতের অন্ধকারে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে গুম করার প্রতিবাদে স্থানীয়রা সংবাদ সম্মেলন করেছে। উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। এ সময় মোহাম্মদ উল্যার মা, বোন, মেয়েসহ অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোহাম্মদ উল্যাহ ২২ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। প্রায় চার বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। এসেই স্ত্রী ও চার ছেলের কাছে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চান তিনি। ২২ বছর ধরে পাঠানো টাকার হিসাব না দিলেও তার ওপর ছেলেদের নির্যাতন প্রতিনিয়ত চলত। এর জের ধরেই শুক্রবার ভোররাতে তার হাত-পা শিকলে বেঁধে ঘর থেকে বের করে নেন ছেলেরা। তার চিৎকারে প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন সবুজ ও ইব্রাহিম ঘর থেকে বের হয়ে ঘটনাটি দেখতে পান। এ সময় বাধা দিতে গেলে সবুজ ও ইব্রাহিমকে মারধর করেন মোহাম্মদ উল্যাহর চার ছেলে। এর পর থেকে মোহাম্মদ উল্যাহর কোনো খোঁজ পায়নি কেউ।

সংবাদ সম্মেলন মোহাম্মদ উল্যার মা আলিমা খাতুন, বোন ফাতেমা খাতুন, মেয়ে রাবেয়াসহ এলাকাবাসী জানায়, মোহাম্মদ উল্যা সুস্থ ও ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি অসুস্থ ছিলেন না। ছেলেদের নামে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তাকে গুম করা হয়েছে। তার নিজের ছেলেরাই তাকে গুম করেছেন। মোহাম্মদ উল্যাকে ফেরত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তারা।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার বাবা মানসিকভাবে অসুস্থ। এ জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কোথায় চিকিৎসার জন্য রাখা হয়েছে, তা তিনি বলতে পারবেন না বলেছেন। বাবার কাছ থেকে তারা অনেক অত্যাচার সহ্য করেছেন। এ জন্য মানসিকভাবে অসুস্থ বাবাকে তারা চিকিৎসার জন্য একটি সংস্থার কাছে নিয়ে গেছেন। সংস্থার নাম জানতে চাইলেও তিনি বলতে পারেননি। এ সময় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ সাংবাদিকদের বলেন, 'বিষয়টি জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ঘটনাটি তদন্ত চলছে। বৃদ্ধকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: