কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২২, ১১:৪২ পিএম

'দেশ আমার দায়িত্ব আমার, ঐক্যবদ্ধ সংহতি, রুখে দিবে দূর্নীতি, রেলওয়ের দূর্নীতি অবসান হোক' এই স্লোগান কে বুখে ধারণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ও যাত্রী দূর্ভোগ বন্ধের ছয় দফা দাবিতে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এ সময় দাবি আদায়ে জনমত গঠনে সর্বস্থরের ছাত্র সমাজের ব্যানারে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হয় এবং রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান তাঁরা। যদি এই ৬ দফা দাবি অচিরেই মানা না হয় তাহলে তাঁরা সামনে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিবেন বলে জানান।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের সাংবাদিক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন আকাশ বলেন, 'আমাদের আরও আগে রেলের এই অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করা উচিত ছিল। রনি যখন রেলের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে একাই আন্দোলন শুরু করেন তখন আর ঘরে বসে থাকতে পারিনি। তার সাহস ও মনোবল আমাদের আন্দোলনের প্রেরণা জুগিয়েছে। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অহিংস।' দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রেলের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আমাদের অহিংস কর্মসূচি চলবে।' তিনি আরো বলেন, রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গত ৭ জুলাই থেকে একাই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন মহিউদ্দিন রনি। তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় অহিংস আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আজ আমরা কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দাঁড়িয়েছি। তিনি আরো বলেন, কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনসহ সারা বাংলাদেশের রেলওয়ে স্টেশনকে কালোবাজারি সিন্ডিকেট ও দূর্নীতি মুক্ত রেল স্টেশন চাই।

কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র মোঃ আনিসুর রহমান ভূইয়া আবির বলেন, 'অনলাইনে ১০ মিনিটের মধ্যে টিকেট শেষ হয়ে যায়। কাউন্টারে আসলে বলে টিকেট নেই। অথচ কালো বাজারে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি দিলে টিকেট পাওয়া যায়। কিছু দুর্নীতিবাজের কারণে আমাদের রেল ধ্বংস হতে পারে না। সবাইকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।' তিনি আরো বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ বলছে রনির দাবিগুলো যৌক্তিক এবং তারা ইতোমধ্যে সেগুলো নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু রনির বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও তার এই যৌক্তিক দাবি গুলো মেনে নেওয়া হচ্ছে না। আর এটা শুধু রনির একার দাবি না এটা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি।

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ছাত্র মোঃ জুবায়ের হোসেন রাকিব বলেন, রনির প্রতিবাদসহ ৬ দফা দাবিতে অনেকদিন যাবত অহিংস কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তিনি আরো বলেন, আমরা এই ৬ দফা দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য আজ কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে আসছি। এটা আমাদের সবার দাবি।

এছাড়াও আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন, সাংবাদিক রায়হান জামান, মাসুদ রানা, হোসেনপুর সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র মোঃ ইনফাত আকন্দ, অলিনেওয়াজ খান কলেজের ছাত্র, রাদিতুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, কিশোরগঞ্জ বত্রিশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ছাত্র আদ্রিয়ান ফারাবি রুবেল, রবিউল ইসলাম আকাশ, মাহবুর রহমান জিসান, আতিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান, শুভ, নৌশাদ, শান্ত, সম্রাট, মাহিয়ান, মুশফিক, রেদোয়ান, আমান উল্লাহ, সজিব, আকরাম প্রমুখ।

এসব শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, টিকিট ক্রয়ে যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; হয়রানির ঘটনায় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে; যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে; অনলাইন কোটায় টিকিট ব্লক বা বুক করা বন্ধ করতে হবে, পাশাপাশি অনলাইন-অফলাইনে টিকিট ক্রয়ে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে; ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক, তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়াতে হবে এবং ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনা মূল্যে খাবার পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন-ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: