ই-পাসপোর্ট সেবায় স্বস্তি ফিরেছে নোয়াখালীতে

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৭ পিএম

এমআরপি পাসপোর্টের গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশের ন্যায় নোয়াখালীতেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ডিজিটাল ই-পাসপোর্টের সেবা গ্রহণ করছে গ্রাহকরা। ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা এর মাধ্যমে ই-গেট ব্যবহার করে খুব সহজে দেশের বাইরে যাওয়া যায়। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়াতে হয় না। নোয়াখালী পাসপোর্ট অফিসের তথ্যমতে, গত দুই বছরে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৭৭টি। গ্রাহকদের বিতরণ করেছে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৩১৬টি পাসপোর্ট।

জানা যায়, ই-পাসপোর্ট বায়োমেট্রিক একটি পাসপোর্ট, এতে অ্যামবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ রয়েছে। পাসপোর্টধারীর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষণ করা হয়৷ দেশে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই প্রথম ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হয়। তবে ই-পাসপোর্টে ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, ১০টি আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ। এটি অত্যন্ত নিরাপত্তা সুরক্ষিত একটি ব্যবস্থা যা পাসপোর্ট জালিয়াতি হবার সম্ভাবনা নেই। এমআরপির তুলনায় ই-পাসপোর্ট তৈরিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি থাকায় সেবা পেতে নাগরিকদের ভোগান্তি পোহাতে হয় কম। স্বল্প সময়ে মিলছে কাঙ্ক্ষিত ই-পাসপোর্ট। আগে দীর্ঘ সময় লাগায় এখন অফিসের কার্যক্রম ও ই-পাসপোর্ট সেবা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাসপোর্ট নিতে আসা গ্রাহকেরা।

ই-পাসপোর্ট নিয়ে কথা হয় ইতালির নাগরিক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মারিয়া তাসনুভার সাথে তিনি বিডি২৪লাইভকে বলেন, এমআরপি পাসপোর্টের থেকে ই-পাসপোর্ট সুবিধা অনেক বেশী। এখন ডিজিটাল যুগে সবকিছু অনলাইনে থাকে। বিদেশে বিমানবন্দরগুলোতে ই-পাসপোর্ট না থাকলে হয়রানির স্বীকার হতে হয়। তিনি তার বাবার জন্য ই-পাসপোর্ট করতে আসছেন বলে জানান। তিনি আরোও বলেন, আগে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে পাসপোর্টের কাজ করতে হতো। মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকতে হতো। এখন অনলাইনে হওয়ায় সুবিধা অনেক বেশী। এখানকার পাসপোর্ট কর্মকর্তারাও অনেক আন্তরিক। সব বিষয়ে অনেক সহযোগীতা করেছেন বলে জানান তিনি।

ভারতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এডমিশন পাওয়া ছেলের জন্য পাসপোর্ট করতে আসা সাইফুল ইসলাম স্বপন বিডি২৪লাইভকে বলেন, ই-পাসপোর্ট হওয়ায় এখন আর ভোগান্তি পোহাতে হয় না। আগে অনেক দিন লাগতো এখন এখনকার কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা সহযোগীতায় কয়েক দিনের ভিতরে পাসপোর্ট পাচ্ছি। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান।

এ বিষয়ে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ছালেম বিডি২৪লাইভকে বলেন, গ্রাহকের পিতামাতা ও তার এনআইডি কার্ডে যদি কোনো তথ্য ভুল না থাকে তাহলে অনলাইন আবেদন করার পর কয়েকবার যাচাই বাছাই করা হয়। সব তথ্যগুলো ঠিক আছে কিনা। নোয়াখালী ভাসানচরে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে তাই তথ্য উপাত্ত ও ডকুমেন্ট অনেক যাচাই বাছাই করা হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশন, আবেদনকারী আবার রোহিঙ্গা নাগরিক কিনা, এনআইডি কার্ডসহ যাবতীয় তথ্য বারবার যাচাই করা হয়। এতে কোনোভাবে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মহের উদ্দিন সেখ বিডি২৪লাইভকে বলেন, সবকিছু অনলাইন প্রক্রিয়া হওয়ায় সময়ানুযায়ী গ্রাহকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে। তথ্যের গরমিল থাকলে সেগুলো আমরা আবার ঠিক করে নিয়ে আসতে বলি। যেহেতু নোয়াখালী জেলা একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। এখানে গ্রাহকদের একটু চাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। ই-পাসপোর্টের জন্য প্রতিদিন আড়াই'শ থেকে ৩'শ মতো আবেদন জমা পড়ছে। যথা সময়ে তা আবার গ্রাহকের কাছে বিতরণ করা হচ্ছে। দুই বছরে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৭৭টি আবেদনে প্রায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৩১৬টি ই-পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই প্রথম ই-পাসপোর্ট চালু করেছে।বিশ্বে এ পর্যন্ত ১২০টি দেশে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ১১৯তম দেশ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: