১১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বাঁধে ধস, মসজিদসহ ২৫ বাড়িঘর বিলীন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ১১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে নতুন করে ধস শুরু হয়েছে। তীর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক ধসে ইতোমধ্যেই মসজিদসহ ২৫ টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন থেকে শুরু করে মাত্র কয়েক দিনে যমুনা নদীর ঘূর্ণিবর্তে ধসে যায় যমুনার তীর রক্ষা বাঁধ।
উপজেলার গালা ইউনিয়নের বেনোটিয়া পয়েন্টের দুইটি স্থানে এ ধস শুরু হয়েছে। নদী তীরের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন ও মধুমালা জানান, বর্ষার শুরুতেই আমরা নদীর এই অংশের আশংকাজনক অবস্থার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করি। কিন্তু সময়মত তারা ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে গত শনিবার থেকে হঠাৎ করেই ধস শুরু হয়। কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের ঐতিহ্যবাহি শিমুলকান্দি জামে মসজিদ নদী গর্ভে চলে যায়। তারপর একে একে আবু সামা, মোঃ সরদ আলী, আমদ হোসেন, আব্দুল বাতেন, মোঃ নদী হোসেন, রূপে মোল্লা, মজনু মিয়া, আলী, শিউলি খাতুনসহ অন্তত ২৫ জনের ঘরবাড়ি যমুনার পেটে চলে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় আমরা আতংকিত। এদিকে এই ভাঙন ঠেকানো না গেলে সরকার যে নতুন করে ২০০ কোটি টাকা ব্যায়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছে সেটিও নদী গর্ভে চলে যাবে। আর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেলে হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়বে।
মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যমুনা নদীর বেনোটিয়া ও মার্জান পয়েন্টে নদী তীর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক ধসে গিয়ে অন্তত ২৫ টি বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনে বাস্তুহারা মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর কোনরকম আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন ঠেকানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেললেও তা ধীরগতিতে হচ্ছে এবং অপর্যাপ্ত বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় গালা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের সাথে। তিনি জানান, 'বাঁধ নির্মাণের সময় তীর রক্ষা বাঁধের একেবারে নিকট থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন এবং অবৈধ বালু ব্যাবসায়ীরা অপরিকল্পিত ভাবে নদী থেকে বালু তোলার কারনে সিসি ব্লকের নিচ থেকে বালু ও জিও ব্যাগ সরে গিয়ে বাঁধের বিভিন্ন অংশে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনেক আগেই লিখিত ভাবে জানালেও তারা কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এর ফলেই এখন ধস সৃষ্টি হয়েছে। আর মাত্র ৪০/৫০ মিটার ভাঙলেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস শুরু হবে। আর সেটা হলে কি পরিমাণ ক্ষতি হবে তা অকল্পনীয়।'
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত ইঞ্জিনিয়ার শাহীন কামালের সাথে। তিনি জানান, ভাঙন শুরু হওয়ার সাথে সাথেই আমরা জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করেছি। আশাকরি আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবো।
ভাঙন কবলিত এলাকায় থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিরাজগঞ্জের কার্যসহকারি মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় হঠাৎ করেই ধস শুরু হয়েছে। আমরা ভাঙন ঠেকাতে সাথে সাথেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে জানানোর পর সাথে সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: