সরকারি ঔষধ পাচারের সময় ধরা হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট!

প্রকাশিত: ০৩ আগষ্ট ২০২২, ০৮:৪৮ পিএম

নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে বিক্রির উদ্দেশ্যে সরকারি ঔষুধ চুরি করে পাচারের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট ও তার বাসার কাজের বুয়া। গত সোমবার দুপুরে সিকিউরিটি গার্ডের কাছে এই ঘটনা ধরা পড়ে। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা এই ঘটনার একটি ভিডিও মঙ্গলবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি আলোচনায় আসে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ফার্মাসিস্ট এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, নরসিংদী সদর হাসপাতালে ১৫ বছর ধরে মালির কাজ করে আসছিলেন হাবলু মিয়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গত সোমবার তাকে প্রমোশন দিয়ে সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্ব দেয়। স্বাভাবিকভাবেই মূল ফটকে দায়িত্ব পালন করছিলেন হাবলু মিয়া। সোমবার দুপুরে হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট তারেক ও তার বাসার কাজের বুয়া বস্তায় ভরে হাসপাতালের রোগীদের জন্য বরাদ্ধ থাকা বিনামূল্যের ঔষুধ নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলেন অন্যত্র বিক্রির উদ্দেশ্যে। ময়লার বস্তা নেয়ার ছলে করা ঘটনাটি হাবলুর চোখে সন্দেহ হলে তিনি আটক করে বস্তা খুলে দেখতে পান এতে ময়লা নেই, রয়েছে বস্তাভর্তি সরকারি বিভিন্ন ধরনের ঔষধ। রোগীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দ এসব ঔষধ পাচারে বাঁধা দিলে ফার্মাসিস্ট তারেক এর সাথে তর্ক বাধে সিকিউরিটি গার্ডের।

এসময় ঘটনাস্থলে জড়ো হন হাসপাতালে আসা রোগীরা। পরে এক রোগীর মুঠোফোনে ধারণ করা এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরকম ঔষুধ প্রায়শই হাসপাতাল থেকে বের হয়ে অন্যত্র বিক্রি হয় বলে মন্তব্য করেন অনেকে। এ নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠে। ওই বস্তায় প্রায় ৪ লাখ টাকার সরকারি ঔষধ ছিলো বলে ধারনা স্থানীয়দের। যা বাইরে নেয়া হচ্ছিল অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে।

সিকিউরিটি গার্ড হাবলু মিয়া জানান, এই ঘটনার পর তাকে বাহাবা দেয়ার বদলে পুণরায় মালির কাজে ফিরে যেতে বলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং বিষয়টি নিয়ে কারও সাথে আলোচনা করার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি ঔষুধ পাচারের মূল হোতা ফার্মাসিস্ট তারেককে। যোগাযোগ করা যায়নি তার মুঠোফোনেও। এই ঘটনায় কথা বলতে রাজি হননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

যোগাযোগ করা হলে নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটির মাধ্যমে করা একটি রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রায়শই সরকারি ঔষধ বাইরে বিক্রি হয় এমন অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি। হাসপাতালে আগত রোগীদের মধ্যে সরকারি ঔষধ বিতরণ করা হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: