লক্ষ্মীপুরে স্বামী-স্ত্রীকে টয়লেটে অবরুদ্ধ করে রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১৬ আগষ্ট ২০২২, ১০:৩৫ পিএম

লক্ষ্মীপুরে সদর উপজেলার ১নং উত্তর হামচাদী ইউনিয়ন পরিষদের টয়লেটে স্বামী-স্ত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। লোকলজ্জা ও ঘৃণা সহ্য না করতে পেরে টয়লেটের ভিতরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী মো. আমজাদ হোসেন। স্বামীকে বাঁচাতে টয়লেটের ভেতর থেকে আত্নচিৎকার দিতে থাকেন স্ত্রী জেসমিন আক্তার। পরে আমজাদকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার জেলা সদর হাসাপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর আগে দুপুর ২ টার দিকে উত্তর হামছাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নির্দেশে গ্রাম পুলিশ সদস্যরা টয়লেটের ভিতরে স্বামী-স্ত্রীকে আটকিয়ে রাখেন।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, আমজাদের মা আয়েশা খাতুন ও মেয়ে লিপি আক্তার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে তাদের (স্বামী-স্ত্রীর) বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান তাদের দুইজনকে পরিষদে তলব করেন। (আজ) বেলা ১১ টার দিকে স্বামী-স্ত্রী পরিষদ কার্যালয় আসেন। চেয়ারম্যান ২টার পর পরিষদে এসে কারো কোনো কথা না শুনে গ্রাম পুলিশদের নির্দেশ দেন তাদের টয়লেটে আটকিয়ে রাখতে। টয়লেটের ভিতরে প্লাস্টিকের রশি দিয়ে গলায় পেছিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বামী-স্ত্রী জানান, আমাদের বিরুদ্ধে দাদি-নাতনি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান তাদের কথা শুনছে। আমাদের কোনো কথা না শুনে আমাদের টয়লেটে বন্দী করে রাখে। তাই এ লজ্জা কোথায় রাখবো? নিজেকে শেষ করে দিবো। ১১ বছর বিদেশ করলাম। সব টাকা মার একাউন্টে পাঠালাম। আজ তার পরিনতি।

এ বিষয় জানতে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, স্বামী-স্ত্রীকে টয়লেটে আটকিয়ে রাখা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে দাদি-নাতনি অভিযোগ দিয়েছে তারা (স্বামী-স্ত্রী) ওদের মারধর ও নির্যাতন করে। ঘটনাটি সত্য প্রমানীত হওয়ায় তাদের পুলিশ দিবো বলছি। এ ঘটনা শুনে আমজাদ অভিনয় করে জ্ঞান হারিয়ে পেলে, হাসপাতাল গিয়ে ভর্তি হয়।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসাপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ.কে.আজাদ বলেন, আমজাদ নামে এক ব্যক্তিকে অসুস্থ অবস্থা হাসপাতাল আনা হয়। বর্তমানে সেই ভর্তি আছে। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. মমিনুল হক মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয় কেউ পুলিশকে জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন বলেন, স্বামী-স্ত্রীকে টয়লেটে আটকিয়ে রাখা ঘটনাটি দুঃখজনক। আমি এখনি চেয়ারম্যানকে ডাকতেছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: