গার্ডার দুর্ঘটনা: ১০ জনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যা মামলা

প্রকাশিত: ২১ আগষ্ট ২০২২, ০৭:১৮ পিএম

রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আজ রবিবার (২১ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের প্রথম স্ত্রী শাহিদা খানম মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বিশ্বাস।

মামলায় যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- ব্যবস্থাপনা পরিচালক (আইএফএসসিওএন ইঞ্জিনিয়ারিং) ইফতেখার হোসেন ও হেড অব অপারেশনস আজহারুল ইসলাম মিঠু, সিজিজিসি’র প্রকিউরমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল ইসলাম, সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী শাহ, ক্রেন চালক আলামিন হোসেন ওরফে হৃদয়, হেলপার রাকিব হোসেন, ইফতেখার হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন তুষার, রুহুল আমীন মৃধা, রুবেল ও আফরোজ মিয়া।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৫ আগস্ট উত্তরা পশ্চিম থানার প্যারাডাউস টাওয়ারের সম্মুখে আশুলিয়াগামী ঢাকা ময়মনসিংহ সেক্টর-৩ এর ৩ নম্বর রোডে প্রাইভেটকারের ওপর বিআরটি প্রকল্পের অধীনে কর্মরত ৫০ টন ওজনের গার্ডার বক্স আছড়ে পড়ে গাড়িতে অবস্থানরত আইয়ুব হোসেন রুবেল ওরফে নুর ইসলাম রুবেলসহ ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে।

প্রতিষ্ঠানের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী শাহ দায়িত্বকালীন সময়ে হেলথ সেফটি অ্যান্ড ইনভাইরোমেন্টের ওপর কোনো জ্ঞান না থাকায় সেফটির জন্য অর্থাৎ ক্রেন চালানোর প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করার যা যা প্রয়োজন তার যথার্থ পদক্ষেপ কখনোই গ্রহণ করেননি। চরম অবহেলা এবং খামখেয়ালীপনা করে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দীর্ঘদিন সুবিধা ভোগ করে চলেছেন, যার ফলশ্রুতিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ক্রেনচালক আলামিন নিজে দায়িত্ব পালন না করে হেলপার রাকিবকে দিয়ে ক্রেন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে বেআইনিভাবে কাজ পরিচালনা করে যাচ্ছিলেন। এ দুর্ঘটনার সময় আলামিন ও রাকিব মৃত্যু পরিস্থিতি জেনেও কোনোরূপ সহযোগিতা না করেই স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যান।

আসামিদের চরম অবহেলা, গাফিলতি এবং অদক্ষ, অযোগ্য জনবল নিয়োগের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের কারণে পাঁচজন মৃত্যুবরণ করেছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরার জসিমউদ্দীন রোডে বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেট কারে থাকা শিশুসহ ৫ যাত্রী নিহত হন। এরা হলেন- মো. রুবেল (৫০), ঝর্ণা (২৮), জান্নাত (৬), জাকিয়া (২) এবং ফাইজ। তবে ভাগ্যক্রম বেঁচে যান নববিবাহিত দম্পতি হৃদয় ও রিয়া। ওই দিন দিবাগত রাতেই নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্ণা আক্তারের ভাই আফরান মণ্ডল বাবু উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন। অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটায় ক্রেনের চালক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিদের মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর এই ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তারা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: