আমার পুতে কয়বার জানি মাগো কইয়া ডাক দিছে

প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৩৮ এএম

কান্নার রোল থামছেই না নারায়ণগঞ্জে নিহত যুবদল কর্মী শাওনের বাড়িতে৷ মা ফরিদা বেগম পুত্রশোকে আহাজারি করছেন। তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নির্বাক হতে হচ্ছে আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, শাওনের মা ফরিদা বেগম ক্ষণে ক্ষণে পুত্রের জন্য বিলাপ করছেন৷ নারায়ণগঞ্জ মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরিফ মায়াসহ কয়েকজন নারী নেত্রী তাকে সান্ত্বনা জানাতে বক্তাবলীস্থ বাড়িতে যান। এসময় ফরিদা বিলাপ করে বলতে থাকেন, 'মরার সময় আমার পুতে জানি কেমন করছে, কয়বার জানি মা কইয়া ডাক দিছে।' একথা বলেই জ্ঞান হারান তিনি।

স্বামী সাহেব আলী মারা যাওয়ার পর ফরিদার বড় ছেলেও অসুস্থ হয়ে মারা যান। তারপর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চলে যান বোন হেনা প্রধানও। এবার রাজনীতির বলি হলেন ছোট ছেলে। চার লাশের বোঝা আর নিতে পারছেন না জানিয়ে নির্বাক চোখে তাকিয়ে থাকেন তিনি।

বিলাপ করতে করতে শাওনের মা বলেন, ‘আমার শরীরটা তেমন ভালো না। সকালে শাওন যখন বাইর হইয়া যাচ্ছিল, জিজ্ঞেস করলাম, কই যাসরে বাবা, কামে যাবি না? কোনো কথা না বইলাই বাইর হইয়া গেল। সেই যে গেল, আইলো তো লাশ হইয়া। ’ বলেই হাউ মাউ করে চিৎকার করেন তিনি। আরো বলেন, ‘আমি তো জানি না এই দলের মধ্যে যাইব। পুত দুইটা যায় না (বড় দুজন), ওরেও যাইতে না করি। অহন আমি শাওন বইলা কারে ডাকমু? কে আমারে আদর কইরা খাওন আইনা দিব? আহারে আমার ছোট পুত, আমার নাড়িছেঁড়া মানিকরে, কই গেলি তুই আমারে ছাইড়া।’ শাওনের মায়ের এমন আকুতি করা ডাক আর কান্নার দৃশ্য উপস্থিত সবার চোখে পানি ঝরিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ শহরে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন যুবদল কর্মী শাওন প্রধান। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ অন্যদিকে ভাঙচুর, সহিংসতার অভিযোগ এনে পুলিশ ৭১জন বিএনপি নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে আরো ৭০০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: