ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূজার কেনাকাটায় লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:২৮ পিএম

দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূজার কেনাকাটায় লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং-মলে চলছে কেনা-কাটা। তবে এবার কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে দোকানগুলোতে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানিরা তাদের দোকানের জামা-কাপড় হাতে নিয়ে দেখাচ্ছেন ক্রেতাদের। ক্রেতারা তাদের পছন্দ মত জামা কাপড় দেখছেন। এই কেনা কাটায় দেখা যায় প্রযুক্তির ছোয়া। ক্রেতারা তাদের পছন্দের জামা কাপড় মোবাইলে ছবি তুলে ইমু, হোয়াটসআপ ও ম্যাসেনজারের মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন তাদের স্বজনদের কাছে। স্বজনেরা সেই ছবি দেখে পছন্দ করছেন। কেউ আবার ভিডিও কলের মাধ্যমে জামা-কাপড় দেখিয়ে পছন্দ করানোর চেষ্টা করছেন তাদের স্বজনদের। এ যেন প্রযুক্তি নির্ভর বেচা কেনা।

নিউ মার্কেটে জেলা শহরের বনিক পাড়ার বাসিন্দা সুমা বনিক জানান, আমার শ্বশুড় বাড়ি জেলার কসবা উপজেলার চন্ডিদেওয়ার এলাকায়। জেলা শহরের বনিক পাড়ায় আমার বাবার বাড়ি। যেহেতু শহরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি, পূজার ও বেশি দিন বাকী নেই সেই সুযোগে শ্বশুর বাড়ির স্বজনদের জন্য পূজার কেনাকাটা করতে মার্কেটে এসেছি। দোকান থেকে আমি আমার পছন্দ মত কাপড় পছন্দ করে মোবাইলে ভিডিও কলের মাধ্যমে স্বজনদের দেখাচ্ছি। স্বজনেরা সে কাপড় দেখে পছন্দ করে দিচ্ছেন তাদের পছন্দ মত কাপড়। তিনি আরও বলেন, কসবা থেকে সকলকে নিয়ে এসে জামা কাপড় কেনা সম্ভব না। কারণ যাতায়াত ভাড়া অনেক পড়বে। প্রযুক্তির কল্যাণে দোকান থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে যার যার পছন্দ মত জামা কাপড় দেখিয়ে খুব সহজেই কিনে নিতে পেরেছি।

সুব্রত রায় নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমি আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে এসেছি তার জন্য কাপড় কিনতে। বাড়িতে আমার আরও দুই মেয়ে রয়েছে। দোকানে তাদের জন্যও কাপড় পছন্দ করে মোবাইলে ছবি তোলে দিয়ে যাচ্ছি। তারা যদি ছবি দেখে পছন্দ করে তাহলে অন্য সময় এসে সে জামা কাপড় নিয়ে যাব।

জেলা শহরের পাইক-পাড়ার বাসিন্দা শিল্পী সাহা জানান, পূজার বেশি দিন আর বাকী নেয়। জেলা শহরের পাইক-পাড়া আমার শ্বশুড় বাড়ি। বাবার বাড়ি নরসিংদীতে। বাবার বাড়িতে বাবা, মা, ছোট দুই ভাই রয়েছে। পূজাতে তাদের উপহার দিতে হবে। আমি আমার পছন্দ মত কাপড় পছন্দ করে, সেই কাপড়ের ছবি তোলে হোয়াটসআপের মাধ্যমে পাঠাচ্ছি। সেই কাপড় দেখে তারা তাদের পছন্দ জানাবে। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব।

নিউ মার্কেটের এলিগেন্স গার্মেন্টসের বিক্রেতা মাসুম শেখ জানান, পূজার বেচা-কেনা এখনো তেমন শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহ থেকে পূজার বেচা-কেনা বাড়বে বলে আশা করি। এখন যারা দূরের স্বজনের উপহার পাঠাবেন, সেই সব ক্রেতাদেরই দোকানে আসছেন। তিনি আরও জানান, কোন ক্রেতা মোবাইলে ছবি তোলে তার স্বজনের কাছে পাঠাচ্ছেন, আবার কোন ক্রেতা ভিডিও কলের মাধ্যমে তার স্বজনকে দোকানের কাপড় দেখাচ্ছেন। স্বজনেরা পছন্দ করে দিলেই ক্রেতারা সেই জামা-কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

ফরিদ মিয়া টাওয়ারের ইজি লাইক ফ্যাশনর দোকানি এমরান জানান, পূজার কেনাকাটা আগামী সপ্তাহ থেকে জমজমাট হবে বলে আশা করি। এখন ক্রেতারা এসে ঘুরে ঘুরে জামা কাপড় দেখছেন। দোকানের কাপড় ছবি তোলে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের স্বজনদের দেখাচ্ছে। কেউ বা আবার ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখাচ্ছে। পরে ছবি দেখে জামা কাপড় পছন্দ করলে তারা কিনে নিয়ে যায়। ক্রেতাদের সুবিধার জন্য আমরা এভাবেই তাদের দেখাচ্ছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: