ফেসবুক পোষ্ট দেখে হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী কলেজ ছাত্রকে দোকান দিলেন ইউএনও

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৫০ পিএম

ফেসবুক পোস্ট ও লাইভের দেখে প্রতিশ্রুতি রাখলেন নবীগঞ্জের ইউএনও শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ। সরকারের বরাদ্দ থেকে একটি দোকান ঘর বানিয়ে দিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধি কলেজ ছাত্র ইমন রায়কে। শারীরিক প্রতিবন্ধি ইমন রায় নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের আদিত্যপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আউশকান্দি র.প স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেনীর দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী। তার বাবা, মা ভাইবোন থাকেন ঢাকার একটি গার্মেন্টসে। অভাবের সংসার তাই নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরে মামার বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নেয় ইমন। সেখান থেকেই প্রতিদিন নবীগঞ্জ হয়ে প্রায় ১ শত টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে আউশকান্দি কলেজে যাওয়া আসা করতে হত ইমনের।

আর এই একশ’ টাকা জোগাড় করতে সাহায্য নিতে হত বন্ধুবান্ধবের কাছে। প্রতিদিন পাওয়া যেটা সম্ভব ছিল না। এভাবেই দুর্বিষহভাবে চলছিলো ইমন রায়ের জীবন যাপন। তারপর ও জীবনের সাথে যুদ্ধ করে পড়ালেখা চালিয়ে যায় সে। বিষয়টি নিয়ে সমকাল পত্রিকার প্রতিনিধি এম,এ আহমদ আজাদ তার ফেসবুকে একটি পোষ্ট ও লাইভ করেন। বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ’র তিনি সমকাল প্রতিনিধির মাধ্যমে ইমন রায়ের সাথে যোগাযোগ করেন। সাংবাদিক আজাদের কয়েকজন প্রবাসী ফেসবুক বন্ধু অসহায় ইমন রায়কে নগদ অর্থ সহায়তা করেন।

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ইমন রায়ের বিষয়টি আমরা সাংবাদিক আজাদের ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে প্রথমে অবগত হই। তার মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাকে আমরা দু’ধরণের সাহায্য করতে পারি জানাই। প্রথমটি হলো, আমরা তাকে একটি ভ্যান গাড়ি দিতে পারি অথবা টঙ্গ দোকান। তখন সে পছন্দ করে টঙ্গ দোকান।

সার্বিক সহযোগীতা করেন সাংবাদিক সাংবাদিক আজাদসহ অন্যান্য সাংবাদিক তাকে সহযোগিতা করেন। এরপর সোমবার ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে ইমন রায়ের কাছে টঙ্গ দোকান হস্থান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ। গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইমন রায় দোকানটি নবীগঞ্জ বাজারে নবীগঞ্জ পৌরসভার শেরপুর রোড লাইটেস ট্যান্ডের পাশে দোকান বসানোর জন্য নিয়ে আসে। এসময় তাকে লাইট পোষ্টের নীচে বসতে কতিপয় প্রভাবশালীরা বাঁধা দেয়। বিষয়টি ইউএনও কে জানানো হলে তিনি আগামী কাল (২১ সেপ্টেম্বর) সমাধান করবেন বলে জানান।

গতকাল ছিল নবীগঞ্জ উপজেলায় তার কর্মস্থলের শেষ দিন, বদলী জনিত কারনে তিনি চলে যাবেন সুনামগঞ্জে তবুও কথা দিয়েছেন বিষয়টির জন্য একদিন বিলম্ভ হলেও সমাধান করে যাবেন। উল্লেখ্য যে, তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হয়ে বদলি হয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলায়।

এ ব্যাপারে ইউএনও মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদায় বেলা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধির কাছে সরকার বরাদ্দকৃত দোকান উপহার দিতে পেরে খুব ভাল লেগেছে। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। এদিকে ইমন রায় টঙ্গী দোকান পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে।ইমন রায় সব সাংবাদিককে দণ্যবাদ জানায় যারা তার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছেন। ইউএনও’ এবং প্রবাসী যারা টাকা দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় ইমন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: