মেয়ের দাবি লাশ পেয়েছি, নিশ্চিত নয় পুলিশ

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০৪ পিএম

খুলনার দৌলতপুরের বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ রহিমা খাতুনের (৫৫) লাশ পেয়েছেন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি জানান। তবে, দৌলতপুর থানা পুলিশ, মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও ময়মনসিংহ পুলিশ বলেছে, বিষয়টি নিয়ে তারা মোটেও নিশ্চিত নয়।

ফেসবুকের পোস্ট ও পুলিশ নিশ্চিত না করায় বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বেশ কয়েকবার ফোন করা হয় মরিয়মের মোবাইল নম্বরে। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রহিমা বেগমের ছেলে এম এ সাদীর মোবাইল নম্বরে কল করা হয়। ফোন ধরেন এক নারী। তিনি রহিমার মরদেহ উদ্ধারের ব্যাপারে কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে মায়ের লাশ পাওয়ার ব্যাপারে পোস্ট দেন মরিয়ম। লেখেন- আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র। রাত ১২টা ৪ মিনিটে আরেকটি পোস্ট দেন তিনি। লেখেন- আর কারও কাছে আমি যাবো না। কাউকে বলব না আমার মা কোথায়! কাউকে বলবো না আমাকে একটু সহযোগিতা করুন। কাউকে বলবো না আমার মাকে একটু খুঁজে দেবেন। কাউকে আর বিরক্ত করবো না। আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি।

এদিকে ফুলপুর থানা পুলিশ জানায়, ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামত সংরক্ষণ করে উদ্ধারের দুদিন পর লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করেছে তারা।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানা এলাকা থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর লাশ উদ্ধার হয়। ওই থানার ওসি আমাদের জানিয়েছেন, বয়স ৩২ উল্লেখ করে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়েছে। তবে তার ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করেছে পুলিশ। আমরা নিশ্চিত নই যে, ফুলপুরে যে নারীর লাশ পাওয়া গেছে তিনিই রহিমা খাতুন কিনা।

ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে থানার বহরদার বাজারে অজ্ঞাত নারীর বস্তাবন্দি লাশ তারা উদ্ধার করা হয়। তাঁর বয়স ৩০ বছরের বেশি হবে। দুদিন পর ১২ সেপ্টেম্বর লাশটি দাফন করেছি। তবে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা করা হয়েছে। ওই নারীর মেয়ে মরিয়ম রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে কল করে বলেছেন তিনি সকালে থানায় এসে পোষাকসহ অন্যান্য আলামত দেখবেন। যদি পোশাক দেখে মেয়েটি বলে এগুলো তাঁর মায়ের। তাহলে চূড়ান্তভাবে লাশ শনাক্তে আমরা মেয়েকে দিয়ে ডিএনএ টেস্ট করাতে পারি।

রহিমা খাতুন নিখোঁজের পর দৌলতপুর থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে ২৮ আগস্ট অজ্ঞাতদের নামে মামলা করেন মেয়ে আদুরী আক্তার। এ মামলায় ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৭শে আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নামেন রহিমা খাতুন। এরপর আর তিনি বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা নিচে নেমে ব্যবহৃত স্যান্ডেল, ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতেও মাকে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তার স্বামীসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৪ই সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: