বৈঠার তালে তালে মুখরিত যমুনা

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৫৭ পিএম

আবহমান গ্রাম-বাংলার প্রাচীন লোক-ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ পরিচিত নাম নৌকা বাইচ। হাজার বছর থেকে গ্রামাঞ্চলের জনপদের জীবনপ্রবাহ ও বিরামহীন এই জীবনযাত্রায় এসেছে অনেক পরিবর্তন। সেইসঙ্গে কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন ধরণের উৎসব মুখোর প্রচীন খেলা-ধুলা। তার সঙ্গে এ দেশের লোককৃষ্টির একটি অঙ্গ নৌকা বাইচ যা হারিয়ে যেতে বসেছে। জমছে না অতীতের মতো আজকাল আর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।

তবে, প্রাচীন ও গ্রাম-অঞ্চলে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য নৌকা বাইচকে বাঁচিয়ে রাখতে বিগত কয়েক বছর ধরে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছোট মনিরের নিজ উদ্যোগে যমুনা নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দাসী পুরাতন ফেরিঘাট ও বৃহত্তর গরুর হাটের উত্তর-পশ্চিম পার্শবে কুকাদইর এলাকায় দুই দিন ব্যাপি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এরই ধারাহিকতায়  শুক্র ও শনিবার (২৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বর) দুইদিনের নৌকা বাইচ অনুষ্ঠি হয়। প্রথম দিন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন, এমপি ছোট মনির। তার পরেই শুরু হয় যমুনার তীরে থৈ থৈ পানির ঢেউয়ে ডাক-ঢোলের তালে তালে গ্রাম বাংলার গান আর মাঝি-মাল্লার বৈঠার ছন্দে ছন্দে মন মাতানো নৌকা বাইচ। নিজ জেলা ও অন্য জেলা থেকেও  সুসজ্জিত রঙবেরঙের নৌকা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। গ্রাম বাংলার ভাটিয়ালি, সারিগান আর বৈঠার তালে তালে মুখরিত হয়ে উঠে চারপাশ।

নৌকা বাইচে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত মুন্না, টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বাবু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আলিফ নূর মিনি, ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম, ছোট মনিরের সহধর্মিনী ঐশী খান প্রমুখসহ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এতে প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার একটি মটরসাইকেল ও দ্বিতীয় পুরুষ্কার একটি ফ্রিজ চূড়ান্ত বিজয়ীদের মাঝে প্রদান করা হয়। নৌকা বাইচটি গোবিন্দাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান গাজী ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধার সভাপতিত্বে ইউপি চেয়ারম্যান ও সাধারণ স¤পাদক দুলাল হোসেন চকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

যমুনা নদীতে দুই দিনের এ নৌকা বাইচে টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর ছাড়াও  সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ প্রায় অর্ধ শতাধিক নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নৌকা বাইচের একদিন আগে সকাল থেকেই টাঙ্গাইল ও ভূঞাপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বাইচের নৌকা অনুষ্ঠান স্থানে এসে উপস্থিত হয়। নৌকা বাইচের উদ্বোধনের দিন শুক্র-শনিবার সকাল থেকে আসতে শুরু করে সরবস্তরের মানুষ।

নৌকা বাইচের প্রথম দিন শুরু দুপুর থেকে গোবিন্দাসী ঘাটের আশে পাশে লাখো মানুষের সমাবেত হয়। দর্শনার্থীরা উচ্ছাস ও আনন্দে মেতে উঠেন নৌকা বাইচ দেখতে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় নদীর তীরবর্তী এলাকায়। এছাড়াও নৌকা বাইচকে কেনদ্র করে নদীর কুকাদাইর কালো সড়কে নানা রকম দোকানপাট গড়ে ওঠে। নৌকা দেখতে আসা  লোকজন প্রতিবারই এমন নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতার আয়োজন করার দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।

সংসদ সদস্য ছোট মনির বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ আয়োজন। প্রতিবছর যমুনা নদীতে নৌকা
বাইচের আয়োজন করা হয়, আগামীতেও এ  প্রতিযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: