পেয়েছেন বৌমার মরদেহ, এখন ছেলের অপেক্ষা

মহালয়ার ধর্মসভায় অংশ নিতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ছেলে, বউমা আর নাতি। সবার পরনে ছিল নতুন কাপড় মুখ ছিল খুশির ছাপ। সব খুশি কেড়ে নিল সর্বনাশা করতোয়া। নাতি জীবিত ফিরলেও লাশ হয়ে ফিরেছে বৌমা। এখনো সন্ধান মেলেনি ছেলের। তাই গত তিনদিন ধরে ছেলের লাশের অপেক্ষায় করতোয়া পাড়ে অপেক্ষা করছেন ৮০ বছর বয়সী মদন কুমার। তিনি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের পাঁচপীর গ্রামের বাসিন্দা।

শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ মদন কুমার। জন্ম থেকে ঠোট কাটা তার। আগে কিছুটা কথা বলতে পারলেও এখন কথা বলতে কষ্ট হয় তার। নিজের কষ্টের অনুভূতি বোঝাতে চোখের পানি ছাড়া কোনো ভাষাই নেই মদন কুমারের কাছে।
করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে বউমার লাশ পেলেও এখনো খোঁজ পাননি ছেলে ভুপেনের। ঘাটের একপাশে বসে থাকতে দেখা যায় মদন কুমারকে। বিলাপ করে বলতে থাকেন কুন্ঠে মোর ছুয়াডা (ছেলেটা)।

মদন কুমারের সঙ্গে আসা ছেলের বউয়ের ভাই প্রফুল্ল বলেন, বোন-বোনজামাই ও ভাগ্নে তিনজন মিলে মহালয়া দেখতে যায়৷ তারপর তো। নৌকা ডুবিতে আমার ভাগ্নে বেঁচে ফিরেছে। সোমবার আমার বোনের লাশ বীরগঞ্জে পাওয়া যায়। কিন্তু এখনও আমরা বোন জামাইয়ের (ভুপেন) লাশ খুঁজে পাইনি। তার লাশের জন্য আমি আর আমার বোনের শ্বশুর ঘাটে অপেক্ষা করছি৷

প্রসঙ্গ, গত রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গোৎসবের মহালয়া উপলক্ষে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর দুলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে নৌকাটি ডুবে যায়। পরে উদ্ধার অভিযান শুরু করে প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৬৭ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে।