ফিঙ্গার প্রিন্ট সমস্যা দূর করতে ১০ আঙ্গুলের ছাপ নেবে ইসি

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহন করা হবে তাই আগেই সকল ভোটারদের দুই হাতের দশ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হবে। এতে ভোট দেওয়ার সময় ফিঙ্গার প্রিন্ট না মেলার সমস্যা অনেকাংশে কেটে যাবে। ইতোমধ্যে যেসব আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে সেগুলোতে ভোটারদের ১০ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার কার্যকর চলমান এবং ইসি আশাবাদী বলেও তিনি জানান।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. আলমগীর বলেন, দশ আঙ্গুলের ছাপ নিলে যদি একটা আঙ্গুলও মিলে যায়, তবু ভোটার ভোট দিতে পারবে। এখন চার আঙ্গুলের ছাপ থাকায় অনেকেই মেলে না। তখন প্রিজাইডিং কর্মকর্তার তার আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে সংশ্লিষ্টকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেন। এ নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে, যে কারচুপির সুযোগ থেকে যায়। ওভাররাইট করা যায়। তাই দশ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ওই ক্ষমতার বিষয়টি আরো স্পষ্টিকরণ করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, বিষয়টি হলো যে ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিলে প্রথম কন্ডিশন হলো যার ভোট তিনিই দেবেন। এটা নিশ্চিত করা হয়। ভোটার উপস্থিত না হলে অন্য কারো ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। এটাই হলো ইভিএমের বিশেষত্ব। যন্ত্রই বলে দেয় কেউ ভোটার কি-না, অর্থ্যাৎ ফিঙ্গার প্রিন্ট যখন দেবে ইভিএমে সাথে সাথে নাম ছবি ভেসে ওঠবে। আর ওই কেন্দ্রের না হলে সেটাও বলে দেবে যে আপনি এই কেন্দ্রের ভোটার নন।
তিনি বলেন, ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে দু'টো কাজ এক সঙ্গে হয়। ভোটারের পরিচয় শনাক্তকরণ এবং ব্যালট ইউনিটে ব্যালট ওপেন হয়ে যায়। তখন ভেতরে গেলেই ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু কারো আঙ্গুলের ছাপ যদি না মেলে, না মেলা কারণ হলো বয়স বেশি হলে, ভারী কাজ করলে বা হাত না থাকলে। এখন কেউ ভোট দিতে না পারলে সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হয়। সেজন্য প্রিজাইডিং অফিসার কী করেন, ভোটারের নাম, পরিচয়, এনআইডি নম্বর মিলিয়ে দেখেন। এরপর পরিচয় শনাক্ত হলে এনআইডি নম্বর ব্যালট ইউনিটে দেওয়া হয়। এই তিনটা যদি মিলে যায় তবেই প্রিজাইডিং অফিস ভোটারের পরিবর্তে নিজের আঙ্গুলের ছাপ দেন। তখন ব্যালট ইউনিট সচল হয়। তিনি ভোট দিতে পারেন না। তিনি কেবল সচল করে দেন। সেটার রেকর্ডও আবার ইভিএমের মধ্যে থেকে যায়, যে কাকে এবং কয়জনকে তিনি এই সুযোগটা করে দিয়েছেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বর্তমানে যেটা করা হয় এমন ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারকে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সুযোগটা করে দিতে পারেন। ৫০০ ভোটার কোনো কেন্দ্রে থাকলে ৫ জন ভোটারকে তিনি সুযোগটা দিতে পারবে না। ৬ নম্বর ভোটার আসলেও প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সেটা পারেন না। কারণ প্রিজাইডিং অফিসারের আইনগত এবং টেকনিক্যালি সে সুযোগ থাকে না।
এই অবস্থায় যদি প্রিজাইডিং পোলিং অফিসার, নির্বাচনি এজেন্ট সবাই একমত হন যে ওই ৬ নম্বর ব্যক্তিটি ভুয়া ভোটার নন, তখন প্রিজাইডিং অফিসার রিটার্নিং অফিসারকে ফোন করেন, তিনি আবার নির্বাচন কমিশনে ফোন করবেন। নির্বাচন কমিশন তখন একটা নতুন পাসওয়ার্ড দেন। সেই পাসওয়ার্ড দিলেই কেবল ওই ৬ নম্বর ব্যক্তিকে সুযোগ করে দিতে পারেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, অনেকে টক শোতে আলোচনা করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার মাধ্যমে ওভাররাইট করা যায়। তো বিষয়টাই তো ভুল। ওভাররাইট করার তো কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টা ভোটারের পরিচয় নিশ্চিতের পর ব্যালট পেপার যেমন দেওয়া হয়, এটাও তাই। মিস ইউজ যাতে কোনোভাবে হতেই না পারে, সে জন্য ১ শতাংশের বেশি আমরা দিই না। ১ শতাংশের ওপরে কোথাও লাগেও না। হঠাৎ কোনোখানে লাগে। এতগুলো নির্বাচন করলাম কেবল বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের একটা নির্বাচনে এমন বাড়াতে হয়েছিল।
মো. আলমগীর বলেন, ওভাররাইট করা যায়, প্রিজাইডিং ভোট দিয়ে দেয়; এই নানা রকম কথাবার্তা, ভুল ধারণা আছে তা দুর করতে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কমিশন বৈঠকে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ওটা ১ শতাংশের ওপরে ওঠবে না কখনো। তবে কথাটা আরো স্পটিকরণ করা হবে, যেন ভুল ধারণা দুর হয়। এখন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে কাকে, কয়জনকে সুযোগটা দিলেন সে তথ্য কেবল ইভিএমে থেকে যায়। এখন এটার সঙ্গে সকলের স্বাক্ষরসহ ফিজিক্যাল ডকুমেন্টও রাখার চিন্তা ভাবনা হচ্ছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, টক শোতে কথা বলতে তো প্রমাণ লাগে না। কিন্তু আমাকে কথা বলতে হলে প্রমাণ লাগে। অনেকেই টক শোতে বলছেন ৫০ শতাংশ ক্ষমতা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। প্রমাণ দেখান আমরা মিলিয়ে দেখি, তাহলে শাস্তি হবে।
এর আগে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের ত্রৈমাসিক সভাতে এনআইডি মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, একটি কথা বলি, আমরা যেহেতু আগামী ভোট (জাতীয় নির্বাচন) আরো সুন্দর করতে চাই, এ কারণে আমরা প্রিঙ্গার প্রিন্ট কিন্তু আপডেট করবো। যারা স্মার্টকার্ড নিয়েছেন, তারা দশ আঙ্গুলের ছাপ দিয়েছেন। যারা দশ আঙ্গুলের ছাপ দেয়নি, আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা দশ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা কমিশনের সঙ্গে ইতিমধ্যে আলোচনা করছি। চলমান হালনাগাদ শেষে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের (আগামী বছরের ২ মার্চ) পরপরই এই কার্যক্রমে যাবো।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: