সিরাজগঞ্জে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগী, অপারেশন বন্ধ

হঠাৎ করে সিরাজগঞ্জে চোখ ওঠা (কনজাংটিভাইটিস) রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ভাইরাসজনিত রোগটি জেলাসহ গ্রামঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে নতুন নতুন রোগী। সাধারণ গ্রীষ্মকালে এ রোগ দেখা দিলেও এবার শরতেই রোগ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তরা চক্ষু হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নেবার পাশাপাশি চোখে ঝাড় ফুঁঁ দিচ্ছে। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল ও ডা. এম এ মতিন বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২-৩ শত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অপারেশন থিয়েটারে ভাইরাসটি আক্রমন করায় ডা. এম এ মতিন বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের অপারেশন কক্ষটি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহে দেড় হাজারের বেশি কনজাংটিভাইটিস আক্রান্ত রোগীরা সেবা নিয়েছেন। রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগই একই পরিবারের সদস্য।
সয়াধানগড়া মহল্লার সোহেল রানা জানান, রাতে হঠাৎ করে চোখে চুলকানি শুরু হয়। সকালে উঠে আর চোখ খুলতে পারি না। পরবর্তীতে পানিয়ে দিয়ে চোখ খুলে দেখে চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে গেছে। ডাক্তারের পরামর্শে কালো চশমা করে থাকছি। সিরাজগঞ্জ শহরের গয়লা মহল্লার তরিকুল ইসলামের ছেলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাউসার (১৩) জানান, হঠাৎ করে দুই চোখ লাল হয়ে যায় এবং ব্যাথা শুরু করে। পরে চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি রয়েছি।
বিএনএসবি বেজ চক্ষু হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন রোগীর ছানি অপারেশন করা হয়। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর তাড়াশ উপজেলার নওগাঁয় একটি চক্ষু ক্যাম্প করা হয়েছিল। সেখান থেকে ৩৫/৪০ জন ছানি পড়া রোগীকে বাছাই করে তাদের অপারেশন করা হয়। তাদের মধ্যে দু’জন হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হন। একজনের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকা ইসলামিয়া আই হসপিটালে পাঠাতে হয়েছে। এরপর থেকেই এ হাসপাতালে অপারেশন বন্ধ রয়েছে।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল হক বলেন, ইতোমধ্যে জেলায় ব্যাপক হারে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিশেধকের কোনো ব্যবস্থা নেই। সবাইকে সচেতন হতে হবে। এমনিতেই রোগ হয় এবং ভালোও হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চোখেন মনি নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীর চোখের মনি নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য এন্টিবায়োটিক এবং এন্টিভাইরাল দিয়ে থাকি। তিনি আক্রান্ত রোগীে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, বাইরে গেলে কালো চশমা পরা, পরিষ্কার টিস্যু বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চোখ পরিষ্কার করাসহ আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ দিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় বলেন, চোখ ওঠা রোগী থেকে দ‚রে থাকতে এবং চোখ উঠলে কী কী করণীয় সেটার উপরে প্রত্যেকটি হাসপাতালে করণীয় বিষয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঋতু পরিবর্তনের কারণে এসময় চোখের রোগ বালাই হয়ে থাকে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে চোখ ওঠা। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। কনজাংটিভাইটিস বা চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা বলে। এতে রোগীর হাতের বা ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সংস্পর্শে আশে-পাশের অনেকেই আক্রান্ত হতে পারে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল (আরএমও) ফরিদ শেখ বলেন, চোখ ওঠার সমস্যাটি ঋতু পরিবর্তনের সময় হয়ে থাকে। তবে এ বছর এ রোগে আক্রান্ত রোগী প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এটি পুরোপুরি ছোঁয়াচে রোগ। এ থেকে বাঁচতে হলে কালো চশমা ব্যবহারের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শে চলতে হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: