ছোট মেয়ের সৎকার শেষ করে বড় মেয়ের মরদেহ খুঁজছেন বাবা

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:০৯ পিএম

পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় পঞ্চম দিনের মতো নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান শুরু হয়েছে। এখনো প্রিয়জনদের লাশের অপেক্ষায় নদীর তীরে অপেক্ষা করছেন তাদের স্বজনরা। এদের মাঝে এমনি একজন ধীরেন চন্দ্র (৫০)। ঘটনার দিন দুই মেয়েকে নিয়ে বাবা বাড়ি বেড়াতে যান ধীরেনের স্ত্রী। বেড়াতে যাওয়ার মূল কারণ ছিল, সেখান থেকে সবাই মিলে মহালয়া দেখতে যাবেন তারা। তবে সেই যাওয়া যে শেষ যাওয়া হবে দুই মেয়ের তা কোনোদিনও কল্পনা করতে পারেননি ধীরেন চন্দ্র।

প্রিয়জনদের হারিয়ে হতবাক ধীরেন। পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। গত রোববার পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে ভয়াবহ নৌকাডুবিতে জোতি (২) ও জয়া (৪) নামে দুই মেয়েকে হারান।  প্রথম দিনেই ছোট মেয়ে জ্যোতির মরদেহ পেলেও ৫ দিনেও খোঁজ মেলেনি বড় মেয়ে জয়ার। ছোট মেয়ের সৎকার করার পর বড় মেয়ের খোঁজে আউলিয়া ঘাট থেকে ইউনিয়ন পরিষদ আর পরিষদ থেকে ঘাটে পাঁচ দিন থেকে ছুটছেন ধীরেন চন্দ্র। মরা হলেও নিজ হাতে বড় মেয়ের লাশ সৎকার করতে চান তিনি।

মেয়ের লাশের অপেক্ষায় থাকা ধীরেন্দ্র চন্দ্র আহাজারিতে বলেন, দুই মেয়েসহ স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে চারদিন আগে বেড়াতে যান। সেখান থেকেই তারা মহালয়া দেখার জন্য বের হয়েছিল। সঙ্গে আমার শ্যালিকা ও শাশুড়িসহ সাতজন ছিল। সাতজনের মধ্যে আমার স্ত্রী আর শ্যালিকা বেঁচে ফিরে এসেছেন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে আমার ছোট মেয়েসহ চারজনের লাশ পেয়েছি। ছোট মেয়ের সৎকারও করেছি। এখনও বড় মেয়ের কোনো খোঁজ পাইনি। ঘটনার দিন থেকে ঘুরছি। কোনো কিছু খেতে পারছি না। খেয়ে না খেয়ে সময় পার হয়ে যাচ্ছে আমার।

এখনো বড় মেয়ের কোনো খবর নেই। লাশ হলেও আমার মেয়েকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিন। আমার সব শেষ হয়ে গেল। কি নিয়ে বেঁচে থাকব আমি। আমার বড় মেয়েকে আমার হাতে ফিরিয়ে দিন জীবিত অথবা মৃত। ঘটনার বিষয়ে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলমান।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: