সদর থানার এসআই বিভাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ আদালতের

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৫৬ পিএম

মামলা তদন্তে গাফিলতি ও অবহেলা করায় কক্সবাজার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিভাস কুমার সাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আদেশের কপিটি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে পাঠানো হয়েছে।

একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার অভিযোগপত্রে তদন্তে অবহেলা, নানা ত্রুটি ও গাফিলতি করায় তদন্ত কর্মকর্তা বিভাস কুমার সাহার গাফিলতি দেখে কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী এ আদেশ দেন।

এজাহার মতে, ২০২০ সালের ৩০ মে কক্সবাজার সদর থানার তৎকালীন এসআই সনৎ বড়ুয়া বাদি হয়ে ৩ জনকে আটক ও ৫-৬ জন অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা করেন।

ওই মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার বিজিবি ক্যাম্প এলাকার এসএমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের মো. নাছিরের ছেলে আবদুল গফুর (২২), একই এলাকার বড়পুকুর সংলগ্ন আবদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ তারেক (২২) ও লাইটহাউজপাড়ার উপরের মসজিদের পাশের মৃত আবুল বশরের ছেলে মোহাম্মদ জাহেদ (২৩)।

পরে সদর থানার এসআই বিভাস কুমার সাহা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ২০২১ সালের ৪ মার্চ আদালতে এজাহার নামীয় ৩ আসামিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

অভিযোগ শুনানিকালে আদালতের পর্যবেক্ষণ মতে, এজাহারে নাম না থাকা সত্ত্বেও যে ৩ জনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরা ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে কোন বক্তব্য তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদান করেননি। এমনকি ওই ৩ জনের নামও সাক্ষীরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেনি। তাছাড়া আদালত অভিযোগপত্রে ও তদন্তে আরো অন্যান্য ত্রুটি লক্ষ্য করেন।

পর্যবেক্ষণে আরো উল্লেখ রয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তকালে চরম অবহেলা ও গাফিলতি দেখিয়েছেন। তিনি কেন এবং কিভাবে সন্ধিগ্ধ ৩ জন আসামিকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্তি করেছেন তা আদালতের নিকট বোধগম্য হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তার এ ধরণের কার্যক্রম কাম্য নয়। তার এ ধরনের অবহেলা, ত্রুটি ও বিচ্যুতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসা আবশ্যক মনে করেছেন আদালত।

এ বিষয়ে কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশেক ইলাহী শাহাজাহান নূরী বলেন, অভিযোগপত্র বিশ্লেষণ করে আদালত এজাহারনামীয় ৩ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলেও বাকি আসামিদেরকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন।

তিনি আরো বলেন, তদন্তে গাফলতি, অবেহেলা এবং নানা ত্রুটিতে ভরপুর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিভাস কুমার সাহার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের আদেশ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার এসআই ও ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিভাস কুমার সাহা বলেন, মামলাটি ১৪০০ পুলিশ একযোগে বদলি হওয়া আমলে দায়ের করা। আমি যোগদানের পর এ মামলাসহ ৩৫টি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায়। নবাগত হিসেবে শহরের রাস্তাঘাট, মানুষজন কিছুই চিনতাম না। এ কারণে অনিচ্ছাকৃত ভাবে আমার প্রতিবেদনটি ভুল হয়েছে। এর পেছনে আমার কোন অনৈতিক উদ্দেশ্য ছিলো না। আমি লিখিত ক্ষমা চাইবো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: