ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, অনিয়ম দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২২, ১১:৪৮ এএম

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুবাইর আহম্মদ বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার রয়েছে নিজস্ব দালাল সিন্ডিকেট।

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) জুবাইর আহম্মদ এর বিরুদ্ধে একমাস ঘুরিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রেকর্ডিও রুহুল আমিনের বাড়ির ৪০টাকার ভুমি উন্নয়ন কর (খাজনা) রশিদ দিয়ে ২ হাজার টাকা উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আব্দুর রশিদ নামের এক ব্যাক্তিকে ১২হাজার টাকার দাখিলা প্রদান করে ৩৭হাজার টাকা নেন জুবাইর আহম্মদ। ঘুষ ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির সহযোগী হিসেবে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) জুবাইর আহম্মদ এর রয়েছে একটি নিজস্ব দালাল সিন্ডিকেট। বেশির ভাগ সময়ে ওই দালালদের মধ্যেস্থতায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) জুবাইর আহম্মদ সেবা প্রার্থীদের কাছে থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) জুবাইর আহমদ সেবা প্রার্থী লোকজন খাজনা দিতে গেলে তাদেরকে অনলাইনের মাধ্যেমে খাজনা পরিশোধ করতে হবে জানান। অন্যথায় আগের মত আর দাখিলা বই নেই। তাই অনলাইনে একদাগের সব খাজনা দেয়ার জন্য বলেন। আর তার দাবীকৃত উৎকোচ দিলে তাৎক্ষনিক দাখিলা বের করে চেক কেটে দেন।

তাড়াশ পৌর শহরে বাসিন্দা হাজী মো: মোশারফ আলীর অভিযোগ, আমার বাড়ির খাজনা ও খারিজ করা রয়েছে। হাল সনের ২শত টাকার দাখিলায় ২০হাজার টাকা দাবি করেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুবাইর আহম্মদ। এ সময় তার অতিরিক্ত ঘুষ দাবীর প্রতিবাদ করা হলে আমার সাথে খারাপ আচরণ করে ও অফিস থেকে বের করে দেন। তার দাবী ওই ঘুষখোর তহশীলদার জুবাইর আহম্মদকে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে বদলীর অনুরোধ জানাচ্ছি। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে উদ্ধর্তন কতৃপর্ক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আমরা তার শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করবো বলেও জানান তিনি।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা সোবাহান আলী সরকার বলেন, আমার জমির খারিজের জন্য ১৫হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও কাজ না করে আরো টাকা দাবী করছে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুবাইর আহম্মদ। তার অন্যায়ভাবে আরো দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমার খারিজ না দিয়ে একমাস অফিসে ঘোরাতে থাকেন। পরে প্রতিবাদ করলে আমার সে খারাপ আচরণ করে।

তাড়াশ সদরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম জানান, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুবাইর আহম্মদ একজন অমানুষ। টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেনা। আমার বাড়ির ৪০টাকার দাখিলার রশিদ দিয়ে আমার কাছে ২ হাজার টাকা নিয়েছে। প্রথমে টাকা দিতে অস্বীকার করায় ১৫দিন ঘুরাইছে। পরিশেষে হয়রানী হাত থেকে রেহাই পেতে তার দাবীকৃত ২হাজার ঘুষ দিয়ে ৪০টাকার খাজনার রশিদ পেয়েছি।

তাড়াশ সদর ইউনিয়নের সোলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাশিদুল ইসলামের অভিযোগ, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুবাইর আহম্মদের কাছে আমার জমির খাজনা ও খারিজ করার জন্য আবেদন দিলে তিনি খাজনা (দাখিলা) বাবদ ৬০হাজার টাকা দাবী করেন। এ নিয়ে দুই সপ্তাহ তার কাছে ধর্না দিয়ে ২০হাজার টাকা দিয়ে খাজনার রশিদ নেই। খাজনার (দাখিলা) রশিদ দেখে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে? কারন খাজনার রশিদে ১২শত টাকা তোলা হয়েছে।

তাড়াশ সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুবাইর আহম্মদ বলেন, আমার বিষয়ে উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা সবই জানে। দালাল পোষা প্রসঙ্গে কথা বললে জানান, তাদেরকে দিয়ে আমি বাহিরের তদন্তকাজে ও অফিসের কম্পিউটারে অনলাইনে কাজ করে নেই। বিনিময়ে তাদেরকে দু-এক পয়সা দেই।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, একটু ব্যস্ত রয়েছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: