এবার 'প্রেমের টানে' বরিশালে এসে প্রাণ গেল ভারতীয় যুবকের

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৪৬ পিএম

এবার প্রেমের টানে বরিশালে আসা এক ভারতীয় তরুণের মৃত্যু হয়েছে। নিহত যুবকের নাম জাবেদ খান (২৯)।  ভারতের উত্তর প্রদেশের হাসানপুরের বা‌সিন্দা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হলেও ওই তার মরদেহের ময়নাতদন্ত  আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন করা হয়েছে।

পরবর্তীতে আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু হয় ওই তরুণের। মর্গে অবস্থানকালে জাবেদের প্রেমিকা জানান, হঠাৎ করে বুকে ব্যথা দেখা দিলে ১০ অক্টোবর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় জাবেদকে। ভোরে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর মুহূর্তে তার মৃত্যু হয়। এদিকে জাবেদ অসুস্থ হয়ে পড়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার প‌রিবারকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে বলে জানান ওই তরুণী।

জানা যায়,ফেসবুকের মাধ্যমে তিন বছর আগে তাদের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। জাবেদ এর আগেও বরিশালে এসেছিলেন এবং সর্বশেষ আমার সঙ্গে দেখা করতে ৯ অক্টোবর বরিশালে আসেন। তিনি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন।

বরিশাল মে‌ট্রোপ‌লিটন পুলিশের ক‌মিশনার সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ভারতীয় নাগ‌রিক জাবেদ ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং ৯ অক্টোবর লঞ্চে করে বরিশাল আসেন এবং নগরের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। পরে জাবেদ তার প্রেমিকাকে নিয়ে ঘোরাঘু‌রিও করেছিলেন। একপর্যায়ে তার বুকে পেইন হ‌চ্ছি‌ল। তিনি সদর হাসপাতালে যায় সেখানে কিছু টেস্ট করিয়ে আবার হোটেলে যায়। তারপরের দিন আবার পেইন হলে তিনি অ্যাপোলোতে গি‌য়ে ডাক্তার দেখান, সেখানের ডাক্তার তার রি‌পোর্ট দেখে দ্রুত শেবাচিম হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি হওয়ার জন্য বলেন। রাত দুইটার দি‌কে জাবেদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করতে বলা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

তবে মৃত্যুর পর সুরতহাল রিপোর্টে হাতে পায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। পুলিশ ক‌মিশনার আরো বলেন, জাবেদের অনেক সমস্যার আছে। কিড‌নিতে সমস্যার পাশাপাশি তার লিভারেও অনেক সমস্যা ছি‌ল। ভারতেও তিনি চি‌কিৎসা নিয়েছিলেন। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে কিছু কিছু জি‌নিস অর্থাৎ অ্যাল‌কোহল জাতীয় জি‌নিস খেতে নিষেধ করেছিলেন। আমরা প্রাথ‌মিক পর্যায়ে এটা জানতে পেরেছি। বরিশালের মেয়েটির সঙ্গে জাবেদের অনেক দিন ধরেই সম্পর্ক ফেসবুকের মাধ্যমে। ২০১৮ সালেও জাবেদ বরিশালে এসেছিলেন।

পরবর্তীতে মরদেহ হস্তান্তরে বিষয়‌টি ভারতীয় দূতাবাসে জানিয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, তারা যেভাবে বলবেন সেভাবেই মরদেহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জাবেদের প‌রিবারের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। আর তার প্রেমিকাও বার বার ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জেনেছি। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে সি‌সিইউতেও ভ‌র্তি ছিলেন জাবেদ।

ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা মে‌ডিকেল ক‌লেজের ফরেন‌সিক মে‌ডি‌সিন বিভা‌গের বিভাগীয় প্রধান ডা. রেফায়েতুল হায়দার বলেন, মৃত ভারতীয় ব্যক্তির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়‌নি, তার শরীরের বি‌ভিন্ন অংশে বেশ কিছু লেখা ছি‌ল। তি‌নি কিছু রোগে ভুগ‌ছিলেন। তিনি বলেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত একটি বোর্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছি। তার ভিসেরা রিপোর্ট ও আগের শারীরিক সমস্যার প্রতিবেদন পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করবো। এদিকে পুলিশ জানিয়েছেন, মরদেহ আপাতত হিমঘরে রাখা হবে। পরিবারের সদস্যদের বরিশালে আসার কথা রয়েছে। তারা এলে ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলে মরদেহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: