ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হলেন ঘরের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মঈনউদ্দিন

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৩১ পিএম

কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডা: মোহাম্মদ আরিফ হোসেনের ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হয়ে গেছেন মঈনউদ্দিন (২৬) নামে এক কিশোর। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর একটি পার্টি সেন্টারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন পঙ্গুত্ব বরণকারী মঈন উদ্দিনের পিতা মো: সফি উল্লাহ।

সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন- মঈন উদ্দিন বর্তমানে পঙ্গু হয়ে নিজ বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার উত্তর জোয়াগ গ্রামে অবস্থান করছেন। তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। অভিযুক্ত ডা: মোহাম্মদ আরিফ হোসেন কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে অর্থোস্কোপি সার্জন এন্ড হাটু বিশেষজ্ঞ হিসেবে সপ্তাহ একদিন রোগী দেখেন। এছাড়া ঢাকা ফুলবাড়িয়া সরকারী কর্মচারী হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে সফি উল্লাহ আরও বলেন- কোমড়ে অসহ্য ব্যাথার কারণে ২২ মে ২০২২ইং তারিখ কুমিল্লা নজরুল এভিনিউ এলাকায় ট্রমা সেন্টারে ডা: মোহাম্মদ আরিফ হোসেনের কাছে চিকিৎসার জন্য যান। এ সময় ডা: আরিফ বিভিন্ন পরীক্ষাসহ এম আর আই করানো হয়। ডাক্তার আরিফ প্রবাসী মঈনকে তার তত্ত্বাবধানে বেসরকারী ফরাজি হাসপাতাল লি: এর ডা: ছারওয়ার জাহানের মাধ্যমে অপারেশন করানোর জন্য ৮০ হাজার টাকা রফাদফা হয়। তাৎক্ষনিক মঈন উদ্দিন ১০ হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করেন। ঢাকা ফরাজি হাসপাতালে হেটে গিয়ে যথারীতি অপারেশন থিয়েটারে যান।

অপারেশনের পরও মঈন উদ্দিনের ব্যথা কমেনি বরং এক পর্যায়ে পঙ্গু হয়ে যান। পুনরায় ডাক্তার আরিফের নিকট সরনাপূর্ণ হলে ডাক্তার পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। মঈন যথারীতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রিপোর্ট গুলো দেখে ডাক্তার অপারেশনে ভুল হয়েছে বলে জানান এবং পুনরায় অপারেশন করানোর জন্য বলেন।

যথারীতি দ্বিতীয় দফায় অপারেশন বাংলাদেশ স্পাইন এন্ড অর্থোপেডিক হসপিটাল (প্রা.) লি: এ অধ্যাপক ডা: শাহ আলমের তত্বাবধানে দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করা হয়। বিধিবাম মঈন এক পর্যায়ে পঙ্গু হয়ে যান মঈন। চলাফেরাও করতে পারছে না। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরনাপন্ন হলে প্রথম অপারেশনেই ডাক্তাররা তার কোমড়ের রগ কেটে ফেলেছে। যার কারণে মঈন উদ্দিন হাটা চলাফেরা করতে পারছে না। বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরন করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। একমাত্র উপার্জক্ষম মঈন প্রবাস থেকে ফিরেই বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা।

সাংবাদিক সম্মেলনে মঈনের মা কান্না জড়িত কণ্ঠে তাসলিমা বেগম বলেন- আমার সুস্থ ছেলেকে ডাক্তার আরিফ পঙ্গু করে দিয়েছে। আমাদের একমাত্র প্রবাসী পুত্র মঈন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আজ ঘরে পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমার নববধু অন্ত:সত্বা। আমি ডাক্তারদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে ডা: মোহাম্মদ আরিফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন- বাংলাদেশের খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা: সারোওয়ার জাহান, ডা: শাহ আলম অসুস্থ মঈনের অপারেশন করেছেন। সে খানে কোন ভুলক্রুটি হয়ে থাকলে তার বিষয়ে তারাই বলতে পারবেন। তিনি আরও বলেন- আমি অসুস্থ মঈনকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি। অধ্যাপক ডা: শাহ আলম ও ডা: ছারওয়ার জাহানের ব্যক্তিগত মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চাচা হাবিব উল্লাহ, মা তাসলিমা বেগমসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: