বাঁশের সাঁকোতে পারাপার, দুর্ভাগ্যে দুই পাড়ের মানুষ

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২২, ০৩:৫৬ পিএম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উত্তরে সীমান্তঘেঁষা গ্রাম মাখনের চর উত্তর ও দক্ষিণ। গ্রামের শেষ প্রান্তেই ভারতের শুরু। ভারতের ভিতর যেন ঢুকে গেছে গ্রাম দুটি। গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষে পূর্ব দিকে ভারত সীমান্ত গারো পাহাড়। উত্তর পশ্চিম ও দক্ষিণে জিঞ্জিরাম নদী। এ কারণে গ্রাম দুটি জেলা ও উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন এক জনপদ পরিণত হয়েছে। গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য শুকনো মৌসুমে নিজেদের অর্থ দিয়ে বাশের সাঁকো তৈরি করে গ্রামবাসী। আবার বন্যার সময় পানির স্রোত ভেঙে যায় সাঁকো। এতে দুর্ভোগে পরতে হয় গ্রামের সাধারণ মানুষদের।

উপজেলা শহর থেকে চল্লিশ কিলোমিটার দূরে ইউনিয়নের নিমাইমারী- সড়কে ভাঙ্গা বাঁশের সাঁকো। এর মাঝে ছোট খেয়া নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে গ্রামবাসী। মাঝে মধ্যে দু একটি মোটর বাইক ও রিক্সা ভ্যান ভাড়া পার হতে দেখা যায়। পানির সামান্য স্রোতেই নৌকাডুবির কারণ হতে পারে। বেশ সর্তকতায় থাকতে হয় নৌকার মাঝিকে। সামান্য কারণে ডুবে যেতে পারে যাত্রীসহ খেয়া নৌকাটি। তবুও উপায়ান্তু না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে যাত্রীরা।

মোটর বাইক চালক মাখানো চোরের গ্রামের বাসিন্দা সুমন বলেন, প্রায় প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছি আমরা। গ্রামবাসীরা নিজেদের অর্থায়নে বাশের সাঁকো নির্মাণ করলেও প্রতিবছর বন্যায় সেই সাঁকোও ভেঙ্গে যায়। স্রোতে সাঁকো ভেঙে পড়ায় বছরের কয়েক মাস খেয়া নৌকায় করে পারাপার হতে হয় গ্রামবাসীদের। কর্তৃপক্ষ যদি স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণ করে দেয় তাহলে আমাদের দুর্ভোগ কমে যাবে।

জিঞ্জিরাম নদীটি নিমাইমারীর পূর্ব পাশ দিয়ে উত্তর দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত। এটি সরু। বর্ষাকালে দু ' কুল কানায় কানায় ভরে উঠলেও শুকনো মৌসুমে মরা খালের মত। নদীর পূর্ব পাড়ে মাখনেরচর উত্তরপাড় ও দক্ষিণ পাড়া গ্রামের। প্রতিদিন গ্রাম দুটির কয়েকশত মানুষ পশ্চিম পাড়ের বাঘার চর বাজার, কাউনিয়ার চর বাজার, পাথরের চর বাজার সহ উপজেলা ও জেলা শহরে যাতায়াত করতে হয়। তাদের ভরসা সাঁকো ও খেয়া নৌকা। সেতু না থাকায় গ্রাম দুটির কয়েক হাজার কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে ভোগান্তির শিকার হন। গ্রামের করো দ্রুত চি প্রয়োজন হলে সেটিও সম্ভব হয় না। সেতু না থাকার কারণে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও সেবা দিতে ব্যার্থ গ্রাম দুটিতে। একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামের মানুষদের। অপর দিকে বন্যার সময় পানি বন্দি হয়ে পড়ে গ্রামের বাড়িঘর। অসহায় হয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া যেন কোন উপয় নেই তাদের।

কাউনিয়ার চর বাজারের কালাম, আব্বাস জানান, জিঞ্জিরাম নদীর ভাঙ্গা বাঁশের সাঁকোর কাছে একটি সেতু নির্মাণ করলে গ্রামবাসীর ভোগান্তি কিছুটা কমে যাবে।

ডাংধরা ইউপি'র সাবেক চেয়ারম্যান শাহ মো: মাসুদ বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে দুই গ্রামের মানুষ অনেক কষ্ট করে যাচ্ছেন একটি সেতুর অভাবে। সেতু না থাকায় তারা কৃষিকাজের উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে বাজারে নিতে না পারায় মূল্য কম পাচ্ছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে গ্রামের কৃষক।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী তোফায়েল বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সত্যি অনেক কষ্টকর জীবন যাপন করতে হয়। আমরা বিষয়টি কর্তপক্ষের দৃষ্টিগোচর করেছি। আশা করছি দ্রুত সময়েই সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে। আপাতত সিমেন্টের খুঁটি এবং কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: