'প্রটোকল' মেনে মাদক কারবার চালিয়ে আসছিলেন রুবেল!

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২২, ১০:২৫ পিএম

সম্প্রতি মাদক ব্যাবসার সাথে জরিত থাকার অভিযোগে মাদক কারবারি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর)। গতকাল রোববার (৩০ অক্টোবর) রাত থেকে আজ সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত সাভার ও উত্তরায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রের এই সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারিরা হলেন মো. রুবেল (৩২), মো. ফারুক দেওয়ান (৩০), মো. নুর উদ্দিন দেওয়ান (৪৫) ও মো. রাব্বি (২১)। তাদের কাছ থেকে ২৯ কেজি গাঁজাসহ একটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩১ অক্টোবর)  দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ডিএনসির ঢাকা মেট্রো. কার্যালয়ে (উত্তর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্লাহ কাজল।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার এবং একটি বিদেশি অস্ত্র ও ২৯ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়েছে। আমরা ২ মাস আগে রুবেলের নেতৃত্বাধীন এই মাদক সিন্ডিকেটের সন্ধান পাই। প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে গত মাসে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালালেও তারা কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তিনি আরো  বলেন, এর মধ্যেই জানতে পারি, চক্রটি গাঁজার একটি বড় চালান হবিগঞ্জ থেকে উত্তরায় মজুতের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসবে। সে অনুযায়ী তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ১০ নম্বর সেক্টরের ১৩ রোডে আমরা অবস্থান নিই। গাঁজা পরিবহনকালে তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারের গতি রোধ করে ২০ কেজি গাঁজাসহ তাদের গ্রেপ্তার করি।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, রুবেলের বসতবাড়িতে আরও গাঁজা মজুত রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সামাইর গ্রামে রুবেলের বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও ৯ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। গাঁজা জব্দের সময় তার বসতবাড়িতে একটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল (ম্যাগাজিনসহ) জব্দ করা হয়। পিস্তলের বিষয়ে রুবেল জিজ্ঞাসাবাদে জানান, পিস্তলটি তিনি বিভিন্ন সময় মাদক অপরাধ সংক্রান্ত সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করতেন।

সক্রিয় চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করত বলেও জানান তিনি। এই কর্মকর্তা আরো জানান, চক্রটি গাজীপুর, ঢাকা কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকাতেও গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করত। নিজ এলাকায় মাদক কারবারে আধিপত্য বিস্তারের জন্য রুবেল অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এর আগেও হবিগঞ্জ, বাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা থেকে তারা গাঁজার একাধিক চালান এনে প্রতি কেজি গাঁজা ৫০ হাজার টাকা দরে কিনে ঢাকায় এনে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতেন। মো.জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গাঁজা পরিবহনকালে তারা একাধিক প্রোটোকল মেইনটেন করতেন। তাদের একটি গ্রুপ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন টহল টিম ও চেকপোস্ট সম্পর্কে আরেকটি গ্রুপকে (মাদক পরিবহনকারী) ক্লিয়ারেন্স দিলে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হতেন। এভাবে তারা হবিগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত তাদের ভাষায় লাইনম্যান ব্যবহার করে মাদক পরিবহন করতেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: