শেরপুরে প্রাথমিকে ৩০ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ আদিবাসী শিশু ঝরে পড়ছে

প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৪১ পিএম

শেরপুরে আদিবাসী শিশুদের লেখা পড়ায় চ্যালেঞ্জ ও করনীয় বিষয়ে এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বুধবার (৯ নবেম্বর) দরিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থা ও গণ সাক্ষরতা অভিযান এ সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে মুলপ্রবন্ধে বলা হয়েছে, আদিবাসী শিশুরা বাড়ীতে নিজনিজ মাতৃভাষায় কথা বলেই বেড়ে ওঠে। ৫/৬ বছরের শিশুরা লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ে গিয়ে ভাষাগত এবং পরিবেশগত সমস্যায় পড়ে। ভাষার ভিন্নতা, ভিন্ন ভাষাভাষি শিক্ষক, সহপাঠি এবং নতুন পরিবেশ, লাজুকতার কারণে তারা একসময় বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

আদিবাসীদের উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান কালাচারাল এন্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (সিডিএস) সমাজভিত্তিক এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, শেরপুরে প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫-৩০ শতাংশ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫০ শতাংশ আদিবাসী শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ে। যে কারণে প্রাথমিক শিক্ষার বুনিয়াদ সঠিক ভাবে হয়ে ওঠেনা, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।

প্রবন্ধে এ সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য ৮ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে আদিবাসী অধ্যূষিত সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকার প্রণীত মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা। আদিবাসী জনগোষ্ঠির নিজের ভাষায় পড়ার জন্য প্রাথমিকের সকল বই নিজ ভাষায় প্রণয়ন করা এবং নিজ ভাষাভাষি আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ নিতে হবে। আদিবাসী শিশুদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি নিশ্চিত করা, বিশেষ পশ্চাৎপদ অঞ্চল ঘোষনা করে বিদ্যালয়ে এক বেলা খাবার/টিফিনের ব্যবস্থা করার দাবী জানানো হয়।

শেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান-এর সভাপতিত্বে এতে ‘আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে মুলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রউফ। দরিদ্র সমাজ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক নাহিদা সুলতানা ইলার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক মো. ইমান আলী। সংলাপে অন্যান্যের মাঝে জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানাউল মোরশেদ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক লুৎফুল কবীর, কারিতাস কর্মকর্তা প্রীতি রিছিল, সিল বাংলাদেশ কর্মকর্তা সুজল সাংমা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হক, মো. নুররন্নবী, শিক্ষক নেতা শওকত হোসেন, শিক্ষক ইশরাত জাহান শম্পা, করোনা দাস কারুয়া, ব্র্যাক জেলা প্রতিনিধি ফারহানা মিল্কী, সাংবাদিক হাকিম বাবুল

প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সংলাপে বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি, আদিবাসী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেন। সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় অভিজ্ঞতার আলোকে নিজনিজ এলাকার আদিবাসী শিশুদের শিক্ষার সংকট, বাস্তব পরিস্থিতি এবং করনীয় বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: