৪৫ দিন পর আরো একজনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৮:২৯ পিএম

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আরও একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে ৪৫ দিনে ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধারকৃত মরদেহটি ভূপেন্দ্রনাথ রায় পানিয়া (৪৪)। বুধবার দুপুরে মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাটের ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধাকৃত মরদেহ দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ছত্র শিকারপুর গ্রামের মদন কুমার রায়ের ছেলে বলে সনাক্ত করেছেন পরিবারের লোকজন। বুধবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর মৃতদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক করতোয়া নদীর আওলিয়ার ঘাটে পাথর ও বালি তুলছিলেন। এ সময় পাথর তোলার যন্ত্রে মরদেহটি বালুর ভিতর থেকে উপড়ে উঠে আসে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান। খবর পেয়ে নিহতের পরিবারে সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পোষাক ও পকেটে থাকা একটি মোবাইল ফোন দেখে তা নিখোঁজ ভূপেন্দ্রনাথ রায় পানিয়ার মরদেহ বলে সনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয়দের ধারণা, মরদেহটি বালু এবং পানির নিচে ছিল বলে ৪৪ দিনেও পুরোপুরি গলে যায়নি। এ নিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭০ জনে। তবে এখনো দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন।

স্থানীয় যুবক রবিউল ইসলাম বলেন, বালু ও পাথর শ্রমিকরা পাথর উত্তোলনের সময় মরদেহটি দেখতে পান। এরপর তারা প্রথমে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে খবর দেন। পরে পরিবারের লোকজন মরদেহের পরনের কাপড় ও পকেটে থাকা মোবাইল ফোন দেখে অর্ধগলিত মরদেহটি ভূপেন্দ্রনাথ রায় পানিয়ার বলে সনাক্ত করেন। বালু এবং পানির নিচে ছিল বলেই সম্ভবত ৪৪ দিনেও মরদেহটি পুরোপুরি গলে যায়নি।

মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আনসার মো রেজাউল করিম শামিম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। নৌকা ডুবির ঘটনায় আমাদের সর্বশেষ ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার হয় এবং তিনজন নিখোঁজ ছিল। এদের মধ্যে আজকে একজনের অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। তার পরনের কাপড় এবং পকেটে থাকা মোবাইল ফোন দেখে পরিবারের লোকজন মরদেহ সনাক্ত করেন।

নৌকা ডুবির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, নিখোঁজ তিন জনের মধ্যে একজন যুবক, একজন বৃদ্ধ এবং একজন শিশু ছিলেন। তাদের মধ্যে উদ্ধারকৃত মরদেহ ভূপেন্দ্রনাথ রায়ের বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের হিসেব অনুযায়ী এখনো আরও দুই জনের মরদেহ নিখোঁজ রয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টম্বর দুপুরে স্থানীয় শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী মহালয়া পুজা উৎসব উৎযাপনে বদ্বেশ^রী মন্দির যাওয়ার সময় করতোয়া নদীর আওলিয়ার ঘাটে মর্মান্তি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। দূর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানের ৪র্থ দিন একজনসহ সর্বমোট ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দেবীগঞ্জ শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ছত্র শিকারপুর গ্রামের ভূপেন্দ্রনাথ রায় পানিয়া (৪০), একই উপজেলার সাকোয়া ডাঙ্গাপাড়ার সুরেন্দ্রনাথ (৬৫) এবং বোদার ঘাটিয়ার পাড়া গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথের শিশুকন্যা শ্রীমতি জয়া রানী (৪) নিখোজ ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: