ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ভারে ভারাক্রান্ত জিন্দানী কলেজ!

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০৯ পিএম

আব্দুর রহিম জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি ১৯৯৮ সালে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ওই কলেজে। ১৯৯৫ সালের স্থাপিত হওয়া কলেজটি ১৯৯৯ সালে এমপিও হয়। তবে ১১ অক্টোবর কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূন্য হলে বিধি মোতাবেক সিনিয়র শিক্ষকদের বাদ দিয়ে গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান অ্যাড. নূরুল ইসলাম নিয়ম বর্হিভুতভাবে আব্দুর রহিমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগদেন। এরপর থেকেই অনেকটা স্বেচ্ছাচারিতার পরিবেশ তৈরি করে নানা অনিয়মের মাধ্যমে দুজন আখের গোছানো শুরু করেন।

সম্প্রতিক তার বিরুদ্ধে কলেজ ফান্ডের অর্থ ইচ্ছামতো ব্যয় করা, নিয়োগ বাণিজের পাঁয়তারা, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না বাড়ানো ও তাদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। আব্দুর রহিম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মেয়াদ ৬ মাসে পেরিয়ে বছরের মাথায় এসে গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান অ্যাড. নূরুল ইসলামের যোগসাজশে ল্যাব সহকারী উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে গত ৩১ অক্টোবর তিন জন অভিভাবক সদস্যের জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেটি ৩ নভেম্বর স্থগিত করা হয়। নিয়োগ পরিক্ষা সম্পন্নের তারিখ ছিল পরের দিন ৪ নভেম্বর।

জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরীর শর্তাবলি রেজুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯ ধারা-৪ এর ২(র) অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পাওয়ার পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হলেও তা মানা হয়নি কলেজটিতে।

অভিভাবক সদস্য আকবর আলী, শহিদুল ইসলাম ও শেখ ফিরোজ অভিযোগ করে জানান, গর্ভনিং বডির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অভিভাবক ও অন্যান্য সদস্যদের মতামতের তোয়াক্কা এবং রেজুলেশনের কোরাম পূরণ না হওয়া সত্ত্বেও এক তরফাভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়। এর আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কাশেম থাকা অবস্থায় অ্যাড. নূরুল ইসলাম চারটি নিয়োগে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেছিল। তখনও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মেয়াদ ৬ মাস পেরিয়ে এক বছর হয়ে ছিল।

নাম প্রকাশ না শর্তে সরকার দলীয় কয়েক জন নেতা অভিযোগ করে বলেন, অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এমপির ভাই অ্যাড. নূরুল ইসলাম গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই জিন্দানী কলেজকে টাকা বানানোর যন্ত্র পরিনত করেছেন। গত বছর চারটি নিয়োগে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা পকেটে ভরেছেন। এ ছাড়াও কলেজের গাছ কাটা হয় অবৈধভাবে। প্রশাসন তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।

জিন্দানী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম জানান, সবার মতামতের ভিত্তিতেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু তিন জন অভিভাবক সদস্য সেই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিল না। পরে তারা অভিযোগ দেয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে।

কলেজের গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান অ্যাড. নূরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিয়োগ বিষয়ে কোন কথা ফোনে বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল করিম বলেন, জেলা প্রশাসক বরাবর এক পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সেই সাথে সরেজমিন তদন্ত করে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। একটি তদন্ত টিম গঠন করা হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: