সীমান্ত এলাকায় বালু ও পাথর উত্তোলন করায় ইজারা বাতিল

সীমান্ত এলাকায় মহাদেও নদ থেকে নিয়ম না মেনে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন করায় ইজারা বাতিল করেছে৷ নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার মহাদেও নদ থেকে নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করায় ইজারা বাতিল করা হয়েছে। গত১০ নভেম্বর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ স্বাক্ষরিত আদেশে উপজেলার ওমরগাঁও, হাসানোয়াগাঁও ও বিশাউতি পযন্ত ৬ নম্বর বালু মহালের ইজারা বাতিল করা হয়।
জেলা প্রসাশন সূত্রে জানা গেছে, অবৈধভাবে বালুও পাথর উত্তোলন রোধ কল্পে উপজেলা প্রশাসন গত ১৭.৭.২০২২,১১.৮.২০২২,৫.৯, ২০২২ তারিখ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্থ জরিমানা সহ অবৈধ ড্রেজার ও পাইপ বিনষ্ট করায় হয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরও জানাযায় যারা দার কতৃক জেলার শর্ত লঙ্ঘন করে যারা বহির্ভূত স্থান থেকে রাতের আঁধারে চুরি করে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। যাহা আর কর্তৃক চুক্তি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এ ছাড়াও উত্তোলন ‘তফসিল বর্হিভুত স্থান থেকে বালু-পাথর উত্তোলন, অননুমুদিত ড্রেজার ব্যবহার, নির্ধারিত মাত্রার অধিক গভীরতায় বালু-পাথর উত্তোলন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন, পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত, বালু পরিবহনে জনগণের চলাচলে বিঘ্নসহ ইজারা চুক্তির ১৫, ১৭, ১৯, ২০, ২৭ ও ৩১ নম্বর শর্তবলির বিধিবিধান লঙ্ঘন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫, খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১১, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১ এর ১১(২) অনুচ্ছেদ ৬৩ নম্বর শর্ত মোতাবেক ওমরগাঁও, হাসানোয়াগাঁও এবং বিশাউতি পযন্ত বালুমহালের ১৪২৯ বঙ্গাব্দের ৩০ চৈত্র পযন্ত মেয়াদের ইজারাদেশ বাতিল করা হয়েছে। বালুমহালটি এখন সরকারের অনুকূলে আনয়ন করা হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলমাকান্দার মহাদেও নদের ওমরগাঁও, হাসানোয়াগাঁও এবং বিশাউতি মৌজায় ৩৫ দশমিক ১৫ একর বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়। ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকায় ইজারা পান দুর্গাপুরের গুদারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. চান মিয়া নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু ইজারাদারের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত থেকে ইজারাকৃত নিদৃষ্ট জায়গা থেকে বালু উত্তোলন না করে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী পর্যটন এলাকাখ্যাত মহাদেও, সন্নাসীপাড়া, চিকনটুপ, বড়ুয়াকোনা, পাতলাবনসহ নদের বিভিন্ন এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করে।
এতে করে এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি নদের গতিপথ পরিবর্তন, নদের তীরের বাড়ি ঘর, ফসলি জমি, বাগান, স্থানীয় বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জা, রাস্তা-ঘাটসহ বেশ কিছু স্থাপনা ভেঙে যাচ্ছে। অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মহাদেও নদ রক্ষা কমিটি, পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা, এআরএফবি ,বাংলাদেশ গারো লিঙাম ওয়েল ফেয়ারএসোসিয়েশন (মেগাম) সহ স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ, মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকরে।
গত ৩১ অক্টোবর মহাদেও নদ রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ তদন্ত করতে কলমাকান্দা সহকারীকমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ১০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ইজারা বাতিল করা হয়।
বাংলাদেশ গারো লিঙ্গাম ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক পিটারসন কুবি বলেন, ‘মহাদেও নদের বালু আমাদের কাছে রীতিমতো দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাবশলীরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে আমাদের আদিবাসী অনেক পরিবারের বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বাজার, রাস্তা-ঘাট ভেঙে গেছে। ইজারা বাতিল করায় আমাদের মাঝে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে এসেছে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসককের সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করায়আমরা অভিনন্দন জানাচ্ছি।
বালু পাথর মহলের নিজেরা বাতিল প্রসঙ্গে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বিডি২৪লাইভ কে বলেন, যারা শর্ত ভঙ্গ করে, জেরার বহির্ভূত স্থান থেকে অবৈধ অনৈতিকভাবে দীর্ঘদিন যাবত ভালো উত্তোলন করে আসছিল, স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য, তদন্ত সাপেক্ষে বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাও জরিমানাআদায় এবং ড্রেজার জব্দ করার বিনষ্ট করা হয়েছে।এর পরও থামছিলনা ছিল না বালু ও পাথর উত্তোলন। বেশ কয়েক বার ইজারাদারদের কে শর্তসাপেক্ষে লিখিত নেওয়ার পরেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন।
তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো তদন্তে প্রতিবেদন দেওয়ার পর ইজারা বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি কেলিখিতভাবে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু সীমান্ত এবং দুর্গম রাস্তার ফলে যাতে করে চুরি করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন না করতে পারে। ইজারাধার বা প্রভাবশালীরা যদি অবৈধ ভাবে বালু পাথরব উত্তোলন করে আরও কটোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: