এমন মৃত্যু ভাইয়ার প্রাপ্য না, ছাত্রলীগ নেতার বোনের পোস্ট

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৩৭ পিএম

বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কৃষি খামারি দুরন্ত বিপ্লবের মরদেহ। তার মাথার পেছনে সমান কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রবিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মফিজ উদ্দিন প্রধান নিপুণ সমকালকে বলেন, আমরা দুরন্ত বিপ্লবের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ করেছি। তার মাথার পেছনে সমান কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অনেকটা জায়গা ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া মাথায় স্বাভাবিকের তুলনায় কম জেল পাওয়া গেছে। তার বুকের দুই পাশেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যা করা হতে পারে।

এদিকে দুরন্তের এমন মৃত্যু মানতে পারছে না তার পরিবার। দুরন্তের বোন শাশ্বতী বিপ্লবের দাবি, তার ভাইয়ের এমন মৃত্যু হতে পারে না। এটি কখনই কামনা করেন না তিনি। ভাইয়ের মৃত্যুতে রোববার আবেগঘন এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাশ্বতী বিপ্লব।

স্ট্যাটাসে শাশ্বতী লিখেছেন, ‘এমন মৃত্যু ভাইয়া ডিজার্ভ করে না। কোনো দিন না। নারায়ণগঞ্জের পাগলাঘাটে কচুরিপানার ওপর এমন অসহায়ভাবে ভেসে থাকতে পারে না দুরন্ত বিপ্লব নামের কিংবদন্তিতুল্য ভাইটা আমার। সারাজীবন নিজের খেয়ালের রাজা ও। যারা ওকে চেনে, তারা জানে কী প্রবল আত্মসম্মানবোধ ছিল ওর। নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আছে এখন। আমরা কাল রাত ৩টায় সেই ছবি দেখে এসেছি। দুর্জয়, ইমরুলরা ওকে আনতে গেছে। ৭ তারিখেই ও চলে গিয়েছিল আমাদের ছেড়ে। কামরাঙ্গীরচর থেকে পাগলা পর্যন্ত ভেসে যেতে ওর ৫ দিন লেগেছে। ’

ভাইয়ের মরদেহের জানাজার সময়ও জানিয়ে দিয়েছেন শাশ্বতী। তিনি লিখেছেন, ‘জানাজা বাদআসর মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটির মসজিদের সামনে হবে। যারা শামিল হতে চান, আসবেন।’

দুরন্তের মৃত্যুর বিষয়ে পাগলা নৌপুলিশের এসআই শাহজাহান সাজু জানিয়েছেন, গত ৭ নভেম্বর কেরানীগঞ্জের কামরাঙ্গীরচরের থুতা খেয়াঘাট দিয়ে নদী পারাপারের সময় দুই ট্রলারের সংঘর্ষে কয়েকজন ট্রলার যাত্রী নদীতে পড়ে যান। ওই সময় দুরন্ত বিপ্লব সাঁতার না জানায় পানিতে ডুবে যান।

দুরন্তের লাশ শনিবার বিকালে বুড়িগঙ্গা নদীর পানগাঁও এলাকা থেকে উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। এরপর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় লাশের ছবি পাঠানো হয়। তখন পুলিশ নিখোঁজ জিডি যারা করেছে, তাদের খবর দিলে ইমরুল খান নামে একজন এসে লাশটি দুরন্ত বিপ্লবের দাবি করেন। তিনি নিজেকে দুরন্তের বোনজামাই বলে নিজেকে পরিচয় দেন।

ইমরুল খান বলেন, দুরন্ত বিপ্লব বিবাহিত, তার স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তান আছে। দুরন্ত ব্যবসা করতেন। তার বাবা-মা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে থাকেন এবং দুরন্ত কেরানীগঞ্জ বসবাস করতেন।

নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার ছোট ইলাশপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে দুরন্ত। ছাত্রলীগের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। সেই সময় ছাত্রলীগের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন দুরন্ত। আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয় উপকমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: