তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো হাইকোর্টে!

ভালোবাসা কোনো মানে না। বিষয়টি আবারো প্রমাণ হলো আবারো। আজ উচ্চ আদালতের দেওয়া এক আদেশে ১০ মাস পর নিজের স্ত্রীকে ফিরে পেয়েছেন শ্যাম সুন্দর। তার স্ত্রী হেমা শর্মা বিয়ের পরদিন থেকে মা ও মামাদের হাতে বন্দি থেকে নির্যাতিত হয়ে আসছিলেন। এর ফলে দীর্ঘ ১০ মাস পর দুই তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো।
রংপুর বদরগঞ্জের যুবক শ্যাম সুন্দর রায়। ভালোবেসে বিয়ে করেছেন একই জেলার হেমাকে। কন্যার পরিবারের সম্মতি না থাকায় কোর্ট ম্যারেজ করেন চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি। তারপর ঘরোয়াভাবে সেরেছেন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু বিয়ের আনন্দ ধরে রাখতে পারেননি শ্যাম সুন্দর। পরদিনই পুলিশ আর স্ত্রীর পরিবারের লোকজন হাজির হয় তার বাড়িতে। পাত্রীর বয়স ১৮ বছরের কম- এমন কারণ দেখিয়ে জোরপূর্বক তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান অভিভাবকরা।অথচ মেয়ের জন্ম নিবন্ধন সনদ বলছে, জন্ম তারিখ ৫ মার্চ ২০০৩। সেই হিসাবে বিয়ের দিন তার বয়স ছিল ১৮ বছর ১০ মাস ১৩ দিন।
ওই দিনের পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে আর দেখা হয়নি শ্যামের। সুযোগ পাননি কথা বলারও। পরিবারের পক্ষ থেকে হেমাকে রাখা হয় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের জিম্মায়।এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (৩১ অক্টোবর) নিজের স্ত্রীকে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন শ্যাম। শুনানি শেষে সে রিট নিষ্পত্তি করে আজ আদালত আদেশ দেন। আদেশে আদালত হেমা শর্মাকে স্বামী শ্যাম সুন্দরের হাত তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তারপর আদালত কক্ষেই শ্যাম সুন্দর তার স্ত্রীকে বুঝে নেন।রোববার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে চাঞ্চল্যকর এই রিটের নিষ্পত্তি হয়।
গত ৩১ অক্টোবর এ রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। আদালতে শ্যাম সুন্দরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। ৩১ অক্টোবর শুনানি শেষে হেমা শর্মাকে আজ (১৩ নভেম্বর) আদালতে হাজির করতে তার মা সাবিত্রী রায়, মামা গণেশ শর্মা ও নারায়ণ শর্মাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী আজ হেমা শর্মাকে নিয়ে আদালতে আসেন তার মা ও মামারা। পুলিশি প্রহরায় হেমা শর্মাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তার বক্তব্য শুনতে চান। তখন হেমা শর্মা আদালতকে জানান, তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক একজন নারী। শ্যাম সুন্দর রায়কে তিনি ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। তারা একসঙ্গে থাকতে চান।
পরবর্তীতে হেমা শর্মা বেশ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি শ্যাম সুন্দরকে বিয়ে করার কারণে তার ওপর হওয়া নির্যাতনের বিবরণ দেন। তাকে দিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করানোর কথাও আদালতকে জানান। আদালত এ সময় হেমার মা, মামা, শ্যাম সুন্দর ও তার বাবার বক্তব্যও শোনেন। পরে আদালত শ্যাম সুন্দর রায়ের হাতে তার স্ত্রী হেমা শর্মাকে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।শ্যাম সুন্দরের পক্ষে শুনানি করা আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, উচ্চ আদালতের আজকের আদেশের ফলে হেমার দীর্ঘ ১০ মাসের বন্দি জীবন ও নির্যাতনের সমাপ্তি হলো। দীর্ঘ দশ মাস পর এই দম্পতি মিলিত হওয়ার সুযোগ পেলেন। এই তরুণ দম্পতির ভালোবাসার গল্পের সফল সমাপ্তি হওয়ায় স্বস্তি ও তৃপ্তি অনুভব করছি।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: