কৃষ্ণচূড়ার ডালে চড়ুইয়ের ঝাঁক, কিচিরমিচির শব্দে মুখর সান্তাহার

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৩:১০ পিএম

ব্যস্ত জংশনে ট্রেনের প্যাঁ পোঁ শব্দ আর যাত্রীদের ছোঁটাছুঁটি। দিনভর স্টেশনের কুলি, দোকানী, আশপাশের যানবাহনের চালকদেরও থাকে চরম ব্যস্ততা। কাজ শেষে ক্লান্ত এসব মানুষের ঘরে ফেরার ব্যস্ততা। ঠিক তখনই এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি শুরু করে চড়ুই পাখির ঝাঁক। শত ব্যস্ততার মাঝেও চড়ুইগুলোর এমন দুষ্টুমির দৃশ্য এক পলক দেখার লোভ সামলাতে পারেন না তাঁরা। এতেই প্রশান্তি আসে ক্লান্ত মানুষগুলোর মনে।

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার জংশন স্টেশনে আর পৌর শহরের বটতলী এলাকায় কৃষ্ণচূড়া ও বটগাছগুলোই এখন পাখিদের নিরাপদ আবাস। গাছগুলোর ডাল ও পাতার ফাঁকে ফাঁকে শুধু পাখি আর পাখি। সন্ধ্যা নামলেই ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি আশ্রয় নেয় গাছগুলোতে। কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পাখিদের এমন দুষ্টুমিতে একটুও অতিষ্ঠ হন না গাছগুলোর নিচের দোকানিরা এবং জংশনের প্লাটফরমে অপেক্ষমান ট্রেন যাত্রীরা। উল্টো কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখেন তাঁরা।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় সান্তাহার জংশনের ১ নম্বর প্লাটফরমের উত্তর পাশে গিয়ে অভূতপূর্ব এক দৃশ্য চোখে পড়ল। দিনের আলো একটু একটু করে কমছে, পাল্লা দিয়ে পাখিদের সংখ্যা বাড়ছে। আশপাশের বিদ্যুতের তার, আর গাছগাছালি পাখিতে ভরে যায়। শুরু হয় এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি। এভাবে কিছুক্ষণ ছোটাছুটির পর গাছের ডালে ও পাতায় বসে আবারও হইহুল্লোড় আর চেঁচামেচি করে নিজের জায়গা করে নেয় পাখিগুলো।

সান্তাহার স্টেশন রোড এলাকার ব্যবসায়ী রনি ও জনি জানান, ‘হঠাৎ করেই কিছু পাখি এখানে আশ্রয় নিতে শুরু করে। লোকজন তাদের বিরক্ত না করায়, কিছুদিনের মধ্যে ওদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এখন কত মানুষ যে পাখিগুলো দেখতে এখানে আসে, তা বলতে পারব না। ঝাঁক বেঁধে পাখিদের ওড়াউড়ির দৃশ্য আর কিচিরমিচির শব্দে মন ভরে যায়। ট্রেন যাত্রীদের পাশাপশি বহু মানুষ এসব চড়ুই পাখির ছবি তুলতে প্রায় প্রতিদিনই আসছেন স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে’।

এদিকে জংশন থেকে প্রায় ৫০ মিটার পশ্চিমে সান্তাহার পৌর শহরের ঘোড়াঘাট এলাকার বটগাছে অসংখ্য পাখি আশ্রয় নিয়েছে। সেখানকার ব্যবসায়ী রাসেল পারভেজ ডল জানান, প্রতিবছর আগস্টের শুরুর দিকে চড়ুই পাখিগুলো এখানে আশ্রয় নেয়। ৪-৫ মাস থাকার পর আবার চলে যায়।

জংশনে এসেছিলেন পৌর শহরের স্কুলশিক্ষক লেমন মাহবুব। পাখির দুষ্টুমি আর কিচিরমিচির তাঁকে আকৃষ্ট করে। পরের দিন সন্ধ্যায় তিনি সঙ্গে করে ছেলে আব্দুর রহমান হুমায়রিকে নিয়ে আসেন। লেমন বলেন, শহরের চিৎকার-চেঁচামেচি আর যানবাহনের শব্দের মাঝেও গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে পাখি দেখে আমরা মুগ্ধ। শত ব্যস্ততা থাকলেও পথচারীরা পাখিদের কোলাহল দেখে একটু হলেও থমকে দাঁড়ান।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: