জেনেভা কনভেশন কূটনীতিকদের জন্য বাইবেল: ইসি আনিছুর

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৫১ পিএম

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি সোমবার (১৪ নভেম্বর) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে পুলিশ কর্মকর্তারা ভোটের বাক্স ভর্তি করেছেন। আমি অন্য কোনো দেশের এমন ঘটনার কথা শুনিনি।...এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিকরা এমন মন্তব্য করতে পারে কি না এই প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, পৃথিবীর কোথাও এমন বলে আমরা জানা নেই। সাহস কেউ করে দিয়েছে বলেই বলে। যার যার ক্ষেত্রে একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আইনে এমন নাই যে সর্বত্র তারা বিচরণ করবে। কোথাও না কোথাও বাধা আছে। জেনেভা কনভেশন তাদের জন্য বাইবেল। সেটা অনুসরণ করলেই যার যার সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকবে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘যারা বলছেন বা করছেন তারা ভালো করেই জানেন তারা কতটুকু করছেন। তারা কূটনীতিক, তারাই জানেন। জেনেভা কনভেশনের মধ্যেই তাদের থাকা ভাল। জাপানের রাষ্ট্রদূত একা নয়, সমসাময়িক আরও অনেক দেশের কূটনীতিকরাও নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন, বিষয়টি নিয়ে ইসির মতামত জানতে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, এটা তারা কোন প্রেক্ষাপটে কী বলেছে, এটা তারাই ভাল জানেন। এ বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করতে চাই না। এটা কূটনীতিকদের নিজস্ব এখতিয়ার। সেটা সত্য কী মিথ্য তারাই জানেন ভাল।’

তারা কী এটা বলতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না। এটা তো আমরা সবাই জানি যে কূটনৈতিক বিষয় আষয় জেনেভা কনভেশন অনুযায়ী হয়। এখন তারা বিবেচনা করে দেখতে পারেন যে তারা কতখানি তার মধ্যে ছিল বা আছে বা ইয়ে করছে। কূটনৈতিক বিষয়ে আমরা তো মনেকরি যে প্রত্যেকটা দেশেরই একটা নিজস্ব স্বকিয়তা আছে। প্রত্যেকেই স্বকীয়তার মধ্যে থাকে। এখন সেখানে তারা কতটুকু আছেন সেটা বিবেচনা করা উচিত।

তাদের মন্তব্যে ইসির প্রতি অনস্থা আরো প্রকট হয় কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আস্থার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। কী ছিল বা আছে, আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) দেখেছেন, বিভিন্ন সময় (নির্বাচনে) আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ভোটের (জাতীয় নির্বাচনের) আগে আমরা আরো আস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করবো। মানুষ এখন বোঝে অনেক কিছুই। ভাল মন্দের বিচার তারাই করে থাকবে। আমরা যদি খারাপ করে থাকি আমরা ইচ্ছা করলেও অনাস্থা ফিরিয়ে নিতে পারবো না। মিডয়ার কল্যাণে মানুষের কাছে সবার আগে পৌঁছে যায়। আমরা জানার আগে, বোঝার আগেই অনেক রকমের মন্তব্য হয়ে যায়। আমাদের একটা প্রচেষ্টা থাকবে, সেটা হচ্ছে যে আমরা ইমেজ সংকটে যেন না ভুগি। ইমেজকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে যেন সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করা যায়। এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। মিডিয়া, রাজনৈতিক পক্ষগুলো সবার সহযোগিতা দরকার।

বিদেশিদের সহযোগিতাও লাগবে? এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিদেশিরা কী ভোটে সরাসরি কিছু করতে পারে? তাদের অভ্যন্তরে আমরা কিছু বলতে পারি কি-না। সে অনুযায়ী তাদের কথাগুলো বলার কথা। আমাদের ওপর কোনো দিন থেকেই কোনো চাপ নেই। এটা কী তার ব্যক্তিগত কথা না দেশের কথা এটাও পরিস্কার হওয়া উচিত। ব্যক্তিগত বিষয় একট আছে, দেশের বিষয় একটা আছে। যারা এগুলো বলেন তাদের আরো ভেবেচিন্তে কথা বলা উচিত।

পুলিশ রাতের বেলা বাকশো ভরে দেয়- এই মন্তব্যে বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি ভোটের আগে সব ওভারকাম হয়ে যাবে। আমরা যা চাচ্ছি তা পারবো বলে মনে করি। আমরা ইচ্ছা করলেও পুলিশ তো অন্য কোথাও থেকে আনতে পারবো না। আমরা একা যেমন কিছু করতে পারবো না্, প্রশাসন, পুলিশও একা কিছু করতে পারবে না। সবার যদি কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকে তাহলে ভাল নির্বাচন হবে বলে আশাকরি।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ভাল ভোট করার মাথা ব্যাথা আছেই্। এজন্য প্রতিদিনই আমাদের চেষ্টা থাকবে। আমরা একা চাইলে তো পারবো না। রাজনৈতিক দল, জনগণ, প্রশাসন; আমরা মিলেই করতে হবে। একা কিছু করতে পারবো না।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: