আলাদা সমাবর্তন চান রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ০২:৫৩ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫৩তম সমাবর্তনের বাকি আর ক’টা দিন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ এর অধিভুক্ত সাত কলেজ এবং ঢাবির উপাদানকল্পে পরিচালিত অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। আর এই আসন্ন সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে স্ক্রীন সমাবর্তন (ডিজিটাল সমাবর্তন) বয়কট ও আলাদা সমাবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সমাবর্তন হলো একজন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীর সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। যেখানে শিক্ষার্থীকে একজন সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা সনদ হস্তান্তরের মাধ্যমে সম্মানিত করে থাকেন। কিন্তু সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এ ধরনের আয়োজন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমাবর্তন দেওয়া হচ্ছে। যেখানে সমাবর্তনে অংশ নেওয়া মোট শিক্ষার্থীর অর্ধকের বেশি সাত কলেজের তারপরও সেখানে এ ধরনের বৈষম্য করা নিন্দনীয়। বর্তমান পৃথিবীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হলেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে স্ক্রিন সমাবর্তন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া রোমান হাসান বলেন, আমরা ডিজিটাল সমাবর্তন চাই না৷ এটি আমাদের জন্য অপমানের৷ আমরা চাই একসঙ্গে অথবা সাত কলেজের জন্য আলাদা সমাবর্তন৷ এর প্রতিবাদ জানাতেই আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি৷

আসাদুল্লাহ গালিব নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করা ঢাবি শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনে পদক দিয়ে উৎসাহিত করা হলেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা নিয়ম। সাতটি কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা কৃতি শিক্ষার্থীদের কোনো পদক দেওয়া হয় না। এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ কারও কাম্য নয়। আমাদের দাবি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হোক।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সায়লা সুলতানা বলেন, সাত কলেজের ভালো ফলাফল করা কৃতি শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের পদকে ভূষিত করা হয় না। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন করার দাবি জানাচ্ছি। আলাদা সমাবর্তনের মাধ্যমে ভালো ফলাফল করা কৃতি শিক্ষার্থীরা যেন অতিথিদের কাছ থেকে সরাসরি পদক গ্রহণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা ঢাবি প্রশাসনের নিতে হবে।

এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা দুই দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হল—

১. সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাদা সমাবর্তনের আয়োজন করা।

২. এবং সাত কলেজের ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক দেওয়া।

উল্লেখ্য, উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অধিভুক্ত হওয়ার পর এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ও ৫২তম সমাবর্তনে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেছিলেন।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ নভেম্বর (শনিবার)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মূল সমাবর্তনের পাশাপাশি অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজের গ্র্যাজুয়েটদের (১ নম্বর ভেন্যু) ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে এবং ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের গ্র্যাজুয়েটদের (২ নম্বর ভেন্যু) ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে এলইডি স্ক্রিনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: