নবীগঞ্জে বিএনপি জামাতের ১২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ১০:৫৩ পিএম

নবীগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। জামাত বিএনপি নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে আরও দুই জন বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে গতকাল ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা সিলেট মহাসড়কের আউশকান্দি পয়েন্টে তল্লাশি চালিয়ে চকিতে পুলিশ বাহুবল উপজেলার দুই বিএনপি নেতাকে আটক করেছে।

এর আগে পুলিশ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছিলো। এদিকে ১৬ নভেম্বর রাতেই সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া প্রধান আসামী করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে পুলিশের উপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ শেখ সুজাত মিয়ার নেতৃত্বে কয়েকটি বাস যোগে কয়েক শ নেতাকর্মী নিয়ে সিলেট পৌছেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উপজেলা বিএনপির যুন্ম আহবায়কসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

নবীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা সিলেট মহাসড়কের আউশকান্দি পয়েন্টে তল্লাাশি চালিয়ে চকিতে পুলিশ বাহুবল উপজেলার দুই বিএনপি নেতাকে আজ সন্ধ্যায় আটক করেছে। গতকাল ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ থানা পুলিশ, তাদেরকে আটক করেছে। গ্রেফতারকৃত হলেন বাহুবল উপজেলার মীরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়পুর গ্রামের ইউনুস আলী, বাহুবল উপজেলার সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দয়ালপুর গ্রামের মোঃ এখলাছুর রহমান। পুলিশ বলছে তাদের আচরণ সন্দেহ জনক হওয়ার কারণে তল্লাশি করে তাদেরকে আটক করা হয়, পরে জানা যায় তাদের বিরুদ্ধে বাহুবল থানায় একাধিক মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে সরকার বিরোধী কার্যক্রম করার লক্ষ্যে বিএনপি নেতাকর্মীরা নবীগঞ্জ শহরতলীর হাজারী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে সমবেত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে নবীগঞ্জ থানার এস আই গৌতমসহ ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে শিহাব আহমেদ চৌধুরীসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এবং ৩টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানার এসআই গৌতম কুমার বাদী হয়ে সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া প্রধান আসামী করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১২০জনকে অজ্ঞাত আসামী করে পুলিশের উপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় আটককৃত ৪জনকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শাহ মুস্তাকিম ও নবীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী কনুকে গ্রেফতার করেছে।মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুন্ম আহবায়ক শিহাব আহমদ চৌধুরীসহ ১০জন কে আটক করা হয়।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া বলেন-১৯ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করা হয়েছে। আমাদের দলের ৪জনকে নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি গতরাতে আমার বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। পুলিশ মামলায় যে ঘটনা উল্লেখ করেছে এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- অপর আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ডালিম আহমদ জানান, আগের একটি নাশকতা মামলার বেশ কয়েকজন আসামিকে আমরা খুঁজছিলাম। গতকাল গভীর রাতে খবর পাই সরকারবিরোধী মিটিং করছে। এরপর সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করি।

ওসির দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন স্বীকার করেছেন, তারা সেখানে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করতে বসেছিলেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই গ্রেফতারকৃতদের সবার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া জানান, তিনি আজকেই রাতের মধ্যে (১৬ নভেম্বর) তার নির্বাচনী এলাকা নবীগঞ্জ ও বাহুবলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থান করছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পুলিশ বাড়ি বাড়ি চিরুনি অভিযান চালিয়েছে তাই আমরা তীব্র আতংকে আছি। এই দুই দিন আগেই ঘর ছাড়া হয়ে সিলেট মাঠে অবস্থান নিয়েছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: