সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ডলার সংকটে আমদানিতে ধস

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২২, ১১:৫৭ পিএম

আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: ডলার সংকটে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরে প্রবেশ করেনি কোন ফলের ট্রাক। আর অন্য পণ্য আমদানি হলেও যা পরিমানে অনেক কম। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে বন্দরের কয়েক'শ শ্রমিক।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা বসে আছে কাজের আশায়। কিন্তু যে পরিমানে বন্দরে শ্রমিক রয়েছে। সে পরিমানে আসছেনা ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক। এতে কর্মহীন হয়ে সারাদিন বসে থেকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে শ্রমিকদের। এদিকে বন্দরের পর্যপ্ত পরিমানে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক না প্রবেশ করায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন ট্রান্সপোর্ট শ্রমিকরাও।

আব্দুর রশিদ নামে এক ট্রান্সপোর্ট শ্রমিকের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমি দিনে ১৫ থেকে ২০ টি ট্রাকে পণ্য লোড দিয়েছি। কিন্তু গত ১৫ দিন থেকে দিনে ৪ থেকে ৫টি ট্রাকের বেশি পণ্য লোড দিতে পারিনা। আসলে বন্দরে তো ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করেনা। আর করলেও পরিমানে অনেক কম। তাই এভাবে কাজ করে আমাদের সারাদিনের খরচ উঠছে না।

নাজমুল নামে স্থল বন্দরের এক শ্রমিক জানান, এর আগে প্রতিদিন গাড়ি লোড-আনলোড করে দিনে প্রায় ৮'শ থেকে ১ হাজার টাকা আয় করেছি। কিন্তু গত মাস থেকেই বন্দরে ভারতীয় ট্রাকের সংখ্যা কমেছে। এতে আমাদের আয়-রোজগারও কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২'শ থেকে ৫'শ টাকায়। কিন্তু বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এতে ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক যুবরাজ আলম মানিকসহ বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের চাহিদামত লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) পাচ্ছিনা। এতে ব্যহত হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য আমদানি। বেশ কিছুদিন যাবত আমরা ফল আমদানি করতে পারিনা। এই স্থল বন্দর দিয়ে। এতে আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ভুট্টা ছাড়া অন্য কোন পণ্যই আমদানি করতে পারিনি আমরা।

সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ওরফে রাজু বলেন, কিছুদিন থেকে আমাদের এলসিগুলো একটু দেরিতে হচ্ছে। তবে আশা করা যাচ্ছে খুব শিঘ্রই এই সমস্যর সমাধান হবে।

পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মইনুল ইসলাম বলেন, গত মাস থেকেই আমাদের এখানে পণ্য আমদানি কমেছে। আগে প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ ট্রাক এখানে প্রবেশ করত। আর বর্তমানে ২৫০-২৮০ টি ট্রাক প্রবেশ করছে।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ধব চন্দ্র পাল জানান, কি জন্য পণ্য আমদানি কমেছে? এ বিষয়ে কথা বলতে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিষেধ রয়েছে। উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এ বিষয়ে কথা বলা যাবে না। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে পণ্য আমদানি কমেছে। গত বছর তাজা ফল আমদানি হয়েছিল ৩১৩ ট্রাক। চলতি বছরে হয়েছে ৭১ ট্রাক। পাথর আমদানি হয়েছিল ২৫ হাজার ৫৯৫ ট্রাক। এবার হয়েছে ২ হাজার ১২৭ ট্রাক। এ্যসোটেড হয়েছিল ২৯ ট্রাক। এবার হয়েছে ৮৩ ট্রাক। অন্যান্য পণ্য গত বছর হয়েছিল ২ হাজার ৯৭০ ট্রাক। এবার হয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ ট্রাক।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: