স্ত্রীকে গভীর রাতে হত্যা করে ফজরের নামাজ পড়তে যান স্বামী

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ০৬:৩২ পিএম

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে পৌর শহরের চরগাঁও আবাসিক এলাকায় তহুরা বেগম (৫৫) নামের ২ সন্তানের জননী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। দাম্পত্য কলহের জের ধরে গভীর রাতে স্বামী ঝাড়– মিয়া তাকে হত্যা করে ফজরে নামাজ পড়তে যায়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল শনিবার ঘাতক স্বামী ঝাড়– মিয়াকে হবিগঞ্জ কারাগারে প্রেরণ করেছেন।

পুলিশ রহস্য উদঘাটনের জন্য তার স্বামী দুই ছেলেসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৮ নভেম্বর আটক করে। পরে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলীর তত্বাবধানে জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী ঝাড়– হত্যার দায় স্বীকার করেন।এবং দুই সন্তান মঞ্জিল মিয়া (২৭) এবং রমজান মিয়া (২২) কে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টায় পৌর এলাকায় চরগাঁও গ্রামের তার বাড়ির বসত ঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। কেমন করে এতো বড় হত্যাকান্ড সংঘটিত হলো।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত তহুরা বেগম নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় চরগাঁও গ্রামের ঝারু মিয়ার স্ত্রী। তার স্বামী ঝাড়– মিয়া ভোররাতে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যান। নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে এসে দেখেন গলাকাটা অবস্থায় স্ত্রীর লাশ বিছানায় পড়ে আছে। সাথে সাথে তিনি শোর চিৎকার করেন, পারা প্রতিবেশি লোকজন এসে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করলে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ডালিম আহমেদ সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ৯টায় লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেন।

ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন হগিঞ্জ পুলিশ সুপার এস,এম মুরাদ আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলন চাকমা, নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেল এএসপি আবুল খয়ের সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী ঝারু মিয়া (৬০) ও ছেলে মঞ্জিল মিয়া (২৭) এবং রমজান মিয়া (২২) কে নবীগঞ্জ থানায় নেয়া হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী ঝাড়– হত্যার দায় স্বীকার করেন।তিনি বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে গভীর রাতে স্ত্রীকে তিনি গলা কেটে হত্যা করেন। পরে এই হত্যা থেকে বাঁচতে তিনি ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান। সেখান থেকে ফিরে শোরচিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন। এটা ছিলো তার পরিকল্পিত কর্মকান্ড। আগামীকাল রবিবার হবিগঞ্জ আদালতে স্বামী ঝাড়– মিয়ার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্ধি দেয়ার কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ডালিম আহমেদ বলেন, আমরা গৃহবধু হত্যাকান্ডের প্রাথমিক মোটিভ উদ্ধার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী ঝাড়– হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে গভীর রাতে স্ত্রীকে তিনি গলা কেটে হত্যা করেন। পরে এই হত্যা থেকে বাঁচতে তিনি ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান। সেখান থেকে ফিরে শোরচিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন। এটা ছিলো তার পরিকল্পিত কর্মকান্ড। তার দুই ছেলেকে মুচলেখা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: