পাথরঘাটায় মৎস্যজীবীদের অধিকারের নিশ্চয়তার দাবি

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০৪:১১ পিএম

'চাই মৎস্যজীবীদের অধিকারের নিশ্চয়তা, চাই তাদের পরিবারের সামাজিক সুরক্ষা' এই স্লোগানকে সামনে রেখে পাথরঘাটায় বিশ্ব মৎস্য দিবস পালিত হয়েছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এর উদ্যোগে ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় একটি আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন, বিশেষ অতিথি ছিলেন কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পিন্টু মুন্সি, কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম, পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, বিএফডিসির ব্যবস্থাপক রাশেদুল ইসলাম,জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, পাথরঘাটা উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আউয়াল হোসেন খলিফা, বিলস-র সাস্টেইনেবল ওশানস প্রোজেক্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী রেজুয়ানুল হক আজম, প্রকল্প সমন্বয়কারী সায়েদুজ্জামান মিঠু প্রমুখ। মাঠ পর্যায়ে মৎস্য শ্রমিকদের জীবনমান ও অধিকার বিষয়ক গবেষণার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন। এ অনুষ্ঠানে অন্তত অর্ধশত জেলে শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের পক্ষ থেকে গবেষণা পত্র পাঠ করেন বিলস এর কর্মকর্তা রেজুয়ানুল হক আজম। গবেষণায় বলা হয়, সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা জেলে তালিকা হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। মাঠ পর্যায়ে করা জরিপের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে যে, এখনও অনেক মৎস্য শ্রমিক জেলে কার্ড পায়নি। স্বাভাবিকভাবেই এসব বঞ্চিত মৎস্য শ্রমিক সরকারের নানা সুরক্ষা সেবা থেকে বঞ্চিত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য টেকসই সমূদ্র প্রকল্পের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।

তা হলো, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকৃত “জেলে” নির্ধারণের জন্য যথাযথভাবে সংজ্ঞায়িত করা, দক্ষ জনবল নিয়োগের মাধ্যমে, এবং ডিজিটাল প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে (এ্যাপস্), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে একটি গ্রহণযোগ্য ও নির্ভুল জেলে তালিকা প্রণয়ন, কমপক্ষে দুই বছর অন্তর অন্তর এই তালিকা হালনাগাদ করা,প্রকৃত মৎস্য শ্রমিকদের, নারী মৎস্যশ্রমিক সহ, পরিচয়পত্র প্রদান, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতিটি মৎস্য শ্রমিকের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্য সহায়তা সঠিকভাবে প্রদান নিশ্চিতকরণ,খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি দৈনন্দিন নানা ব্যয় নির্বাহের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে আর্থিক সংকট মোকাবিলায় মৎস্য শ্রমিকদের জন্য জরুরী ভিত্তিতে টেকসই বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা,জরুরি প্রয়োজনে মৎস্য শ্রমিকদের জন্য সহজ শর্তে ও নামমাত্র সুদে সরকারী উদ্যোগে ঋণের বন্দোবস্ত করা।

সভায় অন্যান্য দাবীসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো মৎস্য শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬'-এ অন্তর্ভুক্ত করা, মৎস্যখাতের জন্য পৃথক আইন প্রণয়ন করা, মৎস্য শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা, মৎস্য খাতের নুন্যতম মজুরি পর্যালোচনার জন্য মজুরি বোর্ড গঠন, মালিকের নামসহ সমুদ্রে যাওয়া মৎস্য শ্রমিকদের তথ্য লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণ, নিহত ও নিখোঁজ মৎস্য শ্রমিকদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: