বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে কুমিল্লা বিএনপির রাজনীতির মাঠ চাঙ্গা

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০৬:২৫ পিএম

বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের ঝিমিয়ে থাকা পর রাজনীতির মাঠ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে নেতাকর্মীরা। ২৬ নভেম্ব^র সমাবেশকে সফল করতে মহানগর, কুমিল্লা দক্ষিণ এবং উত্তর জেলা বিএনপির নেতারা উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতাকর্মীর প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। দফায়-দফায় করছেন প্রস্তুতি সভা, মাইকিং, মিটিং। সমাবেশকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলে ফেরার মিশনে মাঠে কাজ করছে সিটি নির্বাচনে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এবং জনতার মেয়র খ্যাত নিজাম উদ্দিন কায়সার। বহিষ্কৃত এ দুই নেতাই বিএনপির সমাবেশ সফল করতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মাঠে কাজ করছে।

অপরদিকে সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করার মিশনে মাঠে কাজ করছে মহানগর-দক্ষিণ এবং উত্তর জেলা বিএনপি। এরই মধ্যে টাউনহলের সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন সব বাঁধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে একটি সফল সমাবেশ করবেন তারা। সমাবেশের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুমিল্লায় নিজেদের অস্তিত্ব নতুন করে জানান দিতে মরিয়া দলটির নেতারা। সেই লক্ষ্যে কুমিল্লার সমাবেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক জনসমাগম করার টার্গেট নিয়েছেন তারা। সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সরকার পতনের আন্দোলন তরান্বিত করতে এবং বৃহৎ আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতেই এ সমাবেশের আয়োজন বলে জানান বিএনপি নেতাকর্মীরা।

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা বিএনপির রাজনীতিতে বিবাদমান দুই পক্ষই সমাবেশ ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দুই পক্ষই এই সমাবেশকে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের অন্যতম উপলক্ষ্য মনে করে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুর রশীদ ইয়াছিন। আরেক পক্ষের নেতৃত্বে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এরই মধ্যে দলের বিপক্ষে গিয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ায় মনিরুল হক সাক্কুকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বহিষ্কার হলেও নির্বাচনের পর মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন মনিরুল হক। বিএনপির এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাঠে নিজের অবস্থান জানান দিতে প্রতিদিনই নিজের কর্মী সর্মথক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।

বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, সব বাধা উপেক্ষা করে কুমিল্লায় একটি সফল সমাবেশ করা হবে। এদিকে বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে অনেকটাই চাঙ্গা দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কুমিল্লায় নিজেদের ঊর্বর ভূমিতে সংগঠনকে আবারও শক্তিশালী করতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্যে সমাবেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক জনসমাগম করার টার্গেট নিয়েছেন তারা। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুর রশীদ ইয়াছিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ শীর্ষ নেতারা সমাবেশ সফল করতে দিনরাত গণসংযোগসহ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।

অপরদিকে দলে ফেরার মিশন নিয়ে মাঠে কাজ করছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্না সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তাছাড়া জনতার মেয়র খ্যাত নিজাম উদ্দিন কায়সারও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মাঠে নেমেছে। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাঠে নিজের অবস্থান জানান দিতে প্রতিদিনই কর্মী সমর্থক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে আমরা কুমিল্লায় গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে কাজ করছি, এরই মধ্যে আমরা প্রশাসনের পক্ষ হতে লিখিতভাবে মাঠের অনুমোদন পেয়েছি। এটা জনসভা হবে না এইটা জনসমুদ্রে রূপান্তর হবে। মহানগরের কোনো বাড়িতে পুরুষলোক থাকবে না, সবাই সমাবেশে আসবে। মানুষ এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, কুমিল্লা বিএনপির ঊর্বর ভূমি, আমরা নিজেদের ঐতিহ্য ফেরাতে কাজ করছি, তারেক রহমানের নির্দেশে দলকে সুসংগঠিত করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করা হবে। সমাবেশ সফল করার ক্ষেত্রে কেউ অন্তরায় হলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু বলেন, আমরা সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। মানুষের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এই পর্যন্ত যতগুলো বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে তার মধ্যে কুমিল্লার এই সমাবেশে রেকর্ড সংখ্যক লোক সমাবেশ হবে।

যে কোনো মূল্যে আমরা আমাদের সমাবেশ সফল করব। দূরদূরান্ত থেকে আমাদের এখানে যারা আসবে তাদের জন্য আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো, খাওয়া সব ধরনের ব্যবস্থা করছি। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু বলেন, আমরা সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুটি সম্পন্ন করেছি। মানুষের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এই পর্যন্ত যতগুলো বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে তারমধ্যে কুমিল্লার এই সমাবেশে রেকর্ডসংখ্যক লোক সমাগম হবে।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, এই সমাবেশে যারা আসবে তারা ২৩ তারিখ থেকে আসা শুরু করবে। সেখানে আমাদের মহানগর, দক্ষিণ জেলা বিএনপি- আমরা প্রস্তুত। খাওয়া-দাওয়া, বাসস্থান হতে নিরাপত্তা পর্যন্ত সকল ধরনের প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করছি। আমাদের নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে, তারেক রহমানের দেশে আসার দাবিতে, প্রিয় নেত্রী কারাবন্দি হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের যে পরিমাণ সম্পৃক্ততা হয়েছে যেটা কখনো চিন্তাই করা যায়না। এর প্রমাণ হবে কুমিল্লার বিভাগীয় সমাবেশ।

এদিকে, বহিষ্কৃত হলেও সম্মলেন ঘিরে সক্রিয় হয়েছেন সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর অনুসারীরা। বিভিন্ন স্থানে নিজের কর্মী-সর্মথকদের নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। সমাবেশ নিয়ে মনিরুল হক বলেন, আমরা সিটি করপোরেশনের সবগুলো ওয়ার্ডে যাচ্ছি। আমরা সাধারণ মানুষকে সমাবেশে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৭৮টা ফ্ল্যাট প্রস্তুত করছি নেতাকর্মীদের থাকার জন্য। ২৪ তারিখ হতে কুমিল্লার যে কোনো উপজেলা ও যেখান থেকেই নেতাকর্মীরা আসুক, আমাদের এখানে থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: