নভেম্বর মাসেও গাছে দুল খাচ্ছে আশ্বিনা আম

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১২:৩৭ এএম

আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ৪ মাস আগেই শেষ হয়েছে আশ্বিনা আমের মৌসুম। তবে ব্যতিক্রমী এক পদ্ধতিতে জেলার গোমস্তাপুরে উপজেলার আব্দুল করিম নামে এক আম চাষির বাগানে এখনো দুলছে আশ্বিনা জাতের আম। এ আম দেখতে আসছেন অনেকে। বর্তমানে আশ্বিনা আম বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ হাজার টাকা মণ দরে। আর কৃষি বিভাগ বলছে, এ আমে নতুন দ্বার খুলবে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার।

গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকায় আব্দুল করিমের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সারিসারি পেয়ারার গাছ। বাতাসে দুলছে হাজার হাজার সুমিষ্ট পেয়ারা। একটু ভেতরে যেতেই চোখে পড়ে আশ্বিনা আমের গাছ। বাতাসে দুলছে সুস্বাদু আম। এসময়ে আশ্বিনা আম চোখে না দেখতে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর এ আমের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন আম চাষি আব্দুর করিম।

আম চাষি আব্দুল করিম বলেন, গত ১০ বছর থেকেই আম ব্যবসার সঙ্গে আমি জড়িত আছি। কয়েকবছর লাভবান হলেও, ৫ বছর থেকে লোকশান শুনছি। তাই আম গাছের জমিতেই রোপণ করেছি পেয়ারা গাছ। এই পেয়ারা বিক্রি করে ভালোই লাভবান হচ্ছি এখন। তবে যেহেতু আম গাছ রয়েছে। আমের সময়ে মুকুল আসে। কিন্তু এবার আমের সিজিনে মুকুলগুলো ভেঙে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরিচর্যার কমতি রাখিনি। এবার আগস্ট মাসে হঠাৎ দেখি গাছগুলোতে মুকুল চলে এসেছে। মুকুল দেখে পরিচর্যা আরও বাড়িয়ে দি। কিছুদিন পরেই দেখি গাছে আম চলে এসেছে। এই আম বড় হয়ে এখন বিক্রি করছি ১০-১২ হাজার টাকা মণ দরে।

তিনি আরও বলেন, জেলার খুব অল্প স্থানে এই আশ্বিনা আম আছে। তাই আমাকে এই আম নিয়ে আর বাজারে জেতে হয়না। ক্রেতারা আমার বাগানে এসে কিনে নিয়ে যায়। আর পরিচর্যা করার জন্যও ভালো হয়েছে। এক সঙ্গে আম ও পেয়ারা বাগানের পরিচর্যা করতে পারছি। এবার লাভবান হয়ে বুঝলাম। আশ্বিনা আমের সিজিনাল সময়ে যদি মুকুলগুলো ভেঙে দেয়া হয়। তাহলে এই সময় আম আসবে। তাই আমি উদ্দোগ নিয়েছি আমাগী বছর প্রায় ২০ বিঘা জমির আশ্বিনা আমের মুকুল ভেঙে দিব। আর এসময় আম বিক্রি করব।

আম বাগান পাহাড়াদার নুর মোহাম্মদ বলেন, জেলার কানসাট, ‘রহনপুর ও শিবগঞ্জ থেকে এসে বাগান থেকে এখন ১০ হাজার ৭’শ টাকা মণ দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। অসময়ে আম পেয়ে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছে। তেমনী ভোক্তারা আম খেয়ে তৃপ্তি মেটাচ্ছে। আমার মালিক সামনেবার থেকে বেশী করে গাছ লাগিয়ে আশ্বিনা আম ধরাবে।’

হাসিব নামে এক কলেজ ছাত্র বলেন, এই নভেম্বর মাসে আশ্বিনা আম দেখে অসম্ভব হয়ে গেছি। আমি জানতাম যে এসময়ে কাটিমন ও বারি-১১ জাতের বারোমাসি আম পাওয়া যায়। তবে জানতাম না যে আশ্বিনা আমও পাওয়া যাচ্ছে, এসময় তাই দেখতে এসেছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্তকর্তা তানভির আহমেদ সরকার মোবাইল ফোনে জানান, ‘এ উপজেলার কিছু কিছু স্থানে এখনও পাওয়া যাচ্ছে আশ্বিনা আম। আমের সিজিনাল সময়ে মুকুল ভেঙে দিয়ে বেশি পরিচর্যা করে এ আম ধরিয়েছেন চাষিরা। এটা উপজেলার জন্য অবশ্যই বাণিজ্যিক সম্ভাবনার। বর্তমানে সিজিনাল আমের দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। তাই এভাবে যদি অসময়ে চাষিরা আম ধরাতে পারেন, তাহলে অনেক বেশি লাভবান হবেন।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: