১০ টাকার জন্য প্রাণ গেল মায়ের, ছেলের আমৃত্যু কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২২, ০৬:২২ পিএম

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাদক সেবনের জন্য ১০ টাকা না দেওয়ায় মাকে হত্যা করার ঘটনায় ছেলেকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত ছেলের নাম মো. জাফর (২৭)। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

অভিযুক্ত যুবক উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালীয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। তিনি ঢাকায় সুইপারের চাকরি করতেন। নিহত মায়ের নাম শেফালি বেগম। লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আসামি জাফর মাদকাসক্ত ছিল। ১০ টাকা না পেয়ে সে তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করে। আদালত তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চাকরি হারিয়ে জাফর এলাকায় বেকার হয়ে ঘুরাফেরা করতেন। এতে স্থানীয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এরজন্য বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। পরে মা শেফালি বেগমের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে বন্ধুদের পরিশোধ করতেন। ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট সকালে মায়ের কাছ থেকে ১০ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় মায়ের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে মাকে সে কুপিয়ে হত্যা করে। তখন ঘরে অন্য কেউ উপস্থিত ছিল না।

পরবর্তীতে ওইদিন রাতে জাফরকে আসামি করে তার বাবা হোসেন আলী রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। একই বছর ২৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রায়পুর থানা পুলিশের (এসআই) মোহাম্মদ সাফায়েত উল্যাহ আদালতে জাফরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এদিকে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত আইনজীবী হাবিবুর রহমানকে তার পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন।

অভিযুক্ত যুবক মাদকসেবনের কারণে মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিল বলে জানিয়েছেন আইনজীবী হাবিবুর রহমান। তিনি জানান , জাফর মাদকসেবনের কারণে মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিল। নেশা করার জন্য টাকা না পেয়ে সে তার মাকে হত্যা করেছে। এর জন্য দায়ী মাদক। তার ডাক্তারি পরীক্ষা করে ঘটনাটি তদন্ত করলে সে এ মামলার আসামি হতো না। কারণ সে যে তার মাকে হত্যা ব্যাপারে তার মানসিক প্রস্তুতি ছিল না। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: