প্রেমিকের শিশু সন্তানকে খুন, নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

কক্সবাজারের চকরিয়ায় একে একে তিন বিয়ে বিচ্ছেদের পর সাবেক প্রেমিককে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এক নারী। আর তাতে সাবেক প্রেমিক অসম্মতি জানালে তার শিশুকে হত্যা করে জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নী নামের এ নারী। এ মামলায় জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। এসময় তাকে এক লাখ জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নী (২৭) চকরিয়া পৌরসভার সবুজবাগ এলাকার খলিলুর রহমানের মেয়ে। নিহত শিশু আল ওয়াসী (আড়াই বছর) একই এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে। মামলার বাদী রুনা ইসলাম নিহত শিশুর মা। কক্সবাজার জজ আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোজাফ্ফর আহমদ হেলালী।
আদালতের পর্যবেক্ষনের বরাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীর সঙ্গে নিহত শিশুর বাবা সাহাব উদ্দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীর অন্যত্রে বিয়ে হলেও একে একে তিন বিয়ের সংসার বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর প্রেমিক সাহাব উদ্দিনকে বিয়ের জন্য চাপ দিয়েও বিয়ে করতে রাজী হননি সাহাব উদ্দিন। এতে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটান।
এপিপি মোজাফ্ফর বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মামলার একমাত্র আসামি জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীকে কক্সবাজার কারাগার থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে আনা হয়। দুপুরে বিচারক মামলার রায় পড়া শুরু করেন। পরে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীকে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দিয়েছেন। এসময় তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, মামলার রায় ঘোষণার সময় একমাত্র আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথির বরাতে মোজাফ্ফর আহমদ হেলালী জানান, গত ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারী বিকালে চকরিয়া পৌরসভার সবুজবাগ এলাকায় বাড়ীর সামনে বাদী রুনা ইসলামের ছেলে আল ওয়াসী ও মেয়ে ইফতি প্রতিবেশী রফিক উদ্দিনের শিশু সন্তান মিনফা ও রাইসার সঙ্গে খেলাধুলা করছিলেন। এক পর্যায়ে বাদী ছেলে আল ওয়াসী ও মেয়ে ইফতিকে নাস্তা খাওয়ানোর জন্য খুঁজতে যান।
এসময় ইফতিকে পেলেও আল ওয়াসীর সন্ধান পাননি। পরে স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর সন্ধান না পেয়ে ঘটনার দিনই চকরিয়া থানায় মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেন। ঘটনার পরদিন ২২ জানুয়ারী সকালে মাতামুহুরী নদীর দক্ষিন পাড়ে পানিতে এক শিশুর মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর স্থানীয়দের কাছে থেকে পেয়ে স্বজনরা শনাক্ত করেন। ওইদিন (২২ জানুয়ারী) রাতে নিহত শিশুর মা রুনা ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর গত ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারী রাতে পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নী নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করে। পরে গ্রেপ্তার আসামি ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এদিকে গত ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ঘটনার তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইসমাইল আদালতে চার্জশীট জমা দেন। পরে আদালত ওই বছরের ২২ অক্টোবর চার্জ গঠন করেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: