ঢাকায় সমাবেশ: প্রস্তুত বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও পুলিশ

প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৩২ এএম

রাজশাহীতে শনিবারের (১ ডিসেম্বরের) সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপির ঢাকার বাইরে বিভাগীয় সমাবেশের সমাপ্তি ঘটছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকার সমাবেশ । সমাবেশ ঘিরে বাড়ছে জল্পনাকল্পনা। এছাড়া সমাবেশের স্থান নিয়েও টানা-হেঁচড়া চলছে। তবে ওইদিনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুত হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দল। এছাড়া  এর বাইরে পুলিশেরও ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।

এছাড়া ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপির নেতারা কঠোর হুশিয়ারি থেকে সরে এসে কিছুটা নমনীয় হয়েছে। তবে যে কোনো মূল্যে এদিন নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমিতি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহবানও জানিয়েছে দলটি। বিএনপি নেতারা ইতোমধ্যে সভা-সমাবেশে জানিয়েছেন, ১০ ডিসেম্বর সরকার পতনের চূড়ান্ত ডাক দেওয়া হবে। আর তারা সরকারের পতনের পর নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী ‘রাষ্ট্র মেরামতের’ রূপরেখা প্রকাশ করবে ওই সভায়। তারা এই রূপরেখার মাধ্যমে একটি ‘রেইনবো নেশন’ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ জন্য তারা ঢাকায় দলীয় এবং দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমাবেশ ঘটাতে চায়।

এছাড়া তৃণমূলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগীয় সমাবেশে পরিবহন ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যে ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। তাদের হোটেলে না থেকে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। যাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হবে না তাদের ঢাকার উপকণ্ঠের জেলা ও উপজেলায় অবস্থান নিতে বলা হয়েছে। যাতে তারা সমাবেশের আগের দিনই ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেন। বিএনপির টার্গেট হচ্ছে সমাবেশের আগের দিনই যাতে নেতাকর্মীরা সবাবেশস্থলে অবস্থান নেন। নির্দেশনাও সেভাবেই দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সমাবেশ উপলক্ষে তাদের পুলিশের তৎপরতার দিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশ তৎপর হওয়ার আগেই তাদের ঢাকায় রওয়ানা হতে বলা হয়েছে। আল ইমরান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এখনও পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়নি। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। আমরা যেকোনো উপায়ে ঢাকার সমাবেশে যাবই।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে দেখেছি পরিবহন ধর্মঘটসহ সরকারের নানা বাধার মুখেও লাখ লাখ মানুষ হাজির হয়েছেন। ঢাকার সমাবেশেও তাই হবে। যতই বাধা দিক সরকার যেকোনো উপায়ে মানুষ আসবেই। আমাদের সমাবেশের প্রস্তুতির কাজ চলছে।’

তার ভাষ্য মতে, ‘আমরা তো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চাইনি। সরকার সেখানে করতে বললেই আমরা করব কেন? আমরা নয়াপল্টনে দলীয় অফিসের সামনেই সমাবেশ করব। পুলিশ নিরাপত্তার কথা বলছে। কিন্তু আমরা তো মনে করি পার্টি অফিসের সামনেই আমরা নিরাপদ থাকব।’তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর সমাবেশ ছাড়া আমাদের আর কোনো পরিকল্পনা নাই। সমাবেশে দলের মহাসচিব পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। আর সমাবেশ ঢাকা বিভাগের। সারা দেশের নয়।’ এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বৃহস্পতিবার পুলিশের আইজিপির সঙ্গে দেখা করে গায়েবি মামলা বন্ধ ও নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া এই সমাবেশ উপলক্ষে নিজেদের প্রস্তুত করছে ক্ষমতাশীল দল আওয়ামী লীগ।  আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে ১০ তারিখের আগেই তারা ঢাকা অবরুদ্ধ করে ফেলবে। ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতো তারা অবস্থান নেবে আর ঢাকার আশপাশের জেলা ও উপজেলায় তারা সমাবেশ মিছিলের মাধ্যমে সক্রিয় থাকবে। ঢাকার ওয়ার্ডে দলীয় নেতাকর্মীরা অবস্থান নেবে। সড়কগুলোতেও তারা সক্রিয় থাকবে। আর সেজন্য এখন ঢাকার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তারা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করছেন।

এদিকে, এই সমাবেশ উপলক্ষে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। এর অংশ হিসাবে ঢাকার প্রবেশপথ ও চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ছে। জানা গেছে, ঢাকার হোটেলগুলোতে তারা ব্যাপক তল্লাশি চালাবে। বস্তি এবং ঢাকার প্রান্তীয় অঞ্চলেও অভিযান হবে। যানবাহনেও তল্লাশি শুরু হবে। ১০ তারিখের আগে থেকেই ঢাকার প্রবেশ মুখগুলোতে তল্লাশির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। আর ঢাকার আশপাশের জেলা ও উপজেলায়ও পুলিশকে সতর্ক থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ঢাকার আবাসিক এলাকাগুলোতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা আছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: