শীত এলেই তাদের সংসারে আসে সচ্ছলতা

প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:০২ পিএম

নড়াইলে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কদর বেড়েছে মুখরোচক শীতের পিঠার। শহরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে দেখা যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। সন্ধ্যা থেকে জমে­ ওঠে ভ্রাম্যমাণ এসব পিঠার দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যায় সেখানে ভিড় জমছে মানুষের।

লোহাগড়া উপজেলা শহর ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোড়ে ও পাড়া- মহল্লায় হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ শীতের পিঠার দোকান নিয়ে বসেছে। লক্ষীপাশা পোস্ট অফিস, পোদ্দার পাড়া মোড়, প্রেস ক্লাবের সামনে, কুন্দশী মোড়,ব্যাপারি পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব পিঠার দোকানের দেখা মেলে। মূলত সেখানে ভাপা ও চিতই পিঠা তৈরি হচ্ছে। ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার স্বাদ পেতে সন্ধ্যায় গায়ে গরম কাপড় জড়িয়ে অনেকেই ভিড় করছে সেখানে।

প্রতিটি পিঠার দাম ৫ থেকে ১০ টাকা। আবার অনেক দোকানি চিতই পিঠার মধ্যে ডিম দিচ্ছেন। এই ডিম চিতই পিঠা প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিশু-কিশোর, দিনমজুর, রিকশাচালক, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পিঠার দোকানে ভিড় করছে। অনেকে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় পিঠা নিয়ে যান বাড়িতে। পিঠা বিক্রেতাদের বেশির ভাগই বলেন, শীতের মৌসুম এলেই তাঁরা কেবল এই ব্যবসায় জড়ান। বছরের অন্যান্য সময় তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন পেশায় শ্রম দেন।

লক্ষীপাশা পোস্ট অফিসের সামনে পিঠা বিক্রেতা রবিউল ইসলাম জানান, আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি পাশাপাশি গত ৩ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি, এ বছর শীতের আগমন দেরিতে হলেও পিঠা বিক্রি শুরু হয়েছে প্রায় ২ মাস ধরেই, বিক্রিও ভালো। নারিকেল, গুড় ও চালের গুঁড়ো দিয়ে ভাপা পিঠা বানালেও চিতই পিঠার সঙ্গে এসব দোকানিরা দিচ্ছেন সরিষার ভর্তা, মরিচের ভর্তা ও ধনেপাতা ভর্তা।

লোহাগড়া পোদ্দারপাড়া মোড়ে গত ৬ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছেন আতাহার শরীফ। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। যা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ তাঁর সংসার চলছে। তবে শীত শেষ হলেই তিনি আবারও অন্য পেশায় চলে যাবেন।

এসব দোকানে পিঠা খেতে আসা মানুষেরা জানান, শীতে পিঠা খেতে ভালো লাগে। দাম কম হওয়াতে তা আরও বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। অফিস ফেরত অনেকেই বাসার জন্য নিয়ে যান। আবার অনেকে দল বেঁধে আসেন আড্ডার সঙ্গে পিঠার খেতে। উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের এলাকার বাসিন্দা মো. নাসির গাজী বলেন, বাসায় এখন পিঠা তৈরি করা অনেক কষ্টকর ও ঝামেলা মনে হয়। বাজারের পিঠা আমার পরিবারের সদস্যদের অনেক পছন্দ।

এছাড়াও প্রায়ই ভাপা ও চিতই পিঠা ক্রয় করে নিজে দোকানে বসে খাই এবং বাসার লোকজনের জন্য কিছু নিয়ে যাই। দরিদ্র লোকজন এসব ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান দিয়েছেন। পুরুষদের পাশাপাশি অনেক নারীও দোকানে পিঠা বিক্রি করছেন। স্বল্প সময়ে বেশ কিছু দরিদ্র মানুষের এর মাধ্যমে বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: