ভূঞাপুরে অরক্ষিত গণকবর, অবহেলিত গণখেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০৫:৫৭ পিএম

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অরক্ষিত গণকবর, অবহেলিত গণখেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণ। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেক দেশ প্রেমিকের অনেক গুলো গণকবর থাকলেও গণকবর গুলো অযত্ম অবহেলায় পড়ে আছে। বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন কিছু ফুল আর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করলেও সারা বছর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মনে রাখে না। এ কারণে স্বাধীনতা ও বিজয়ের ৫১ বছরেও সনাক্ত ও সংরক্ষণ করা হয়নি গণকবর গুলো।

ভূঞাপুরে ৪৭ জন শহীদের ১২ টি গণকবর থাকলেও একটি গণ কবরেরও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর ছাব্বিশা গ্রামে পাকসেনারা আক্রমণ করে পুরো গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় এবং গণহত্যা চালায়। এ গ্রামে ৭ টি গণকবরে ৩৮ জন শহীদ, ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ টি গণকবরে ৪ জন শহীদ ও ভূঞাপুর লৌহজং নদীর তীর সংলগ্ন বালুচরে ৩ টি গণকবরে ৫ জন শহীদের তথ্য পাওয়া গেছে।

ভারই গ্রামের আব্দুল বারী মিঞা ও পূর্ব ভূঞাপুরের ওস্তাদ ক্ষেত্র মোহন বসাক এ ২ জন বুদ্ধিজীবীসহ সম্মুখ যুদ্ধে ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ ছাড়া ১৫ জন বীরঙ্গণার কেউই মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি বলে জানায় মুক্তিযুদ্ধের গবেষক মামুন তরফদার। এর মধ্যে ছাব্বিশা গ্রামে ৮ জন, বামনহাটা গ্রামে ৩ জন, পূর্ব ভূঞাপুর গ্রামে ৪ জন বীরঙ্গণা রয়েছে। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ কেউ গর্ভবতী অবস্থা এবং বাচ্চা প্রসব করে লাজ-লজ্জার ভয়ে ভারতে চলে যায়। এছাড়া ভূঞাপুরে প্রায় অর্ধশত নির্যাতিত মা বোনদের অনেকেই চক্ষুলজ্জার ভয়ে বিষয়টি প্রকাশ করেননি।

টাঙ্গাইলে ‘মহাবীর’ খেতাব প্রাপ্ত ৩ জন বুদ্ধিজীবীর মধ্যে ভূঞাপুরের ২ জন, আব্দুল কদ্দুস ও নজরুল ইসলাম বাকু। টাঙ্গালের শহীদ সালাউদ্দিনের নামে ঘাটাইল ‘শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাস’ নামকরণ করা হলেও ভূঞাপুরের ২ জন শহীদ আব্দুল কদ্দুস ও নজরুল ইসলাম বাকুর নামে কোনো প্রতিষ্ঠান,শহর, বাজার বা রাস্তার নামকরণও করা হয়নি।

স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা পরিষদ বিভিন্ন সময়ে শহীদ আব্দুল কদ্দুস ও শহীদ নজরুল ইসলাম বাকুুর নামে সরকারি ভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বা রাস্তার নামকরণের আবেদন করলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুসেতু এলাকায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোনের (ইপিজেট) নামকরণের দাবী জানায় ভূঞাপুর মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা পরিষদ। ভূঞাপুরে ৩ জন কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। খন্দকার হাবিবুর রহমান, আসাদুজ্জামান আরজু ও আব্দুল কদ্দুস এর মধ্যে ৮ অক্টোম্বর আব্দুল কদ্দুস সম্মুখ সমরে শহীদ হন। গণকবর গুলো সনাক্ত, সংরক্ষণ এবং মহাবীর খেতাবপ্রাপ্তদের নামে প্রতিষ্ঠান বা রাস্তার নামকরণের দাবী দীর্ঘ দিনের।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: