র‌্যাবের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হল ছাত্রলীগ নেতাকে

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২৯ এএম

সংগঠনের আন্তঃকোন্দলের মধ্যে বিক্ষোভ চলাকালে বগুড়ায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটকের পর র‌্যাবের হাত থেকে ছিনিয়ে নিল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় মুজিব মঞ্চের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের ওই নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ঘটনাস্থলে বগুড়া র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিনও উপস্থিত ছিলেন।

ছিনিয়ে নেওয়া ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম আব্দুর রউফ। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। নিজ দলীয় ছাত্রনেতা তাকবির ইসলাম খানকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি। এই হত্যা মামলার কারণে ছাত্রলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই বিরোধীতা করে জেলা ছাত্রলীগের একটি অংশ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করে আসছে। কমিটিকে কেন্দ্র করে ছাত্রীলগের দুটি পক্ষ প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়া শুরু করে। জেলা আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয় এই কমিটিকে কেন্দ্র করে। যদিও নতুন ঘোষিত কমিটিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আসছে। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছে। এতে ছাত্রলীগের বিরোধ আরও পোক্ত হয়।

সুযোগে ছাত্রলীগের বিদ্রোহীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেয়। একই জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ও তালাবদ্ধ করেন তারা। এরপর থেকেই নতুন কমিটির নেতারা তালা ভাঙছেন, বিদ্রোহীরা নতুন করে তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছে। এভাবে প্রায় দেড় মাস ধরে চলছে। এর জেরে গতকাল সোমবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এর আগে ছাত্রলীগ কার্যালয়ের দরজা কেটে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

চলমান এসব ঘটনার জেরে আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়ের আনুসারীরা। এই বিক্ষোভ মিছিলের মধ্যেই ছিলেন বগুড়া আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে তাকে সাতমাথা এলাকা থেকে র‌্যাবের একটি দল তাকে আটক করেন। বিষয়টি টের পাওয়ামাত্রই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে জোর করে রউফকে ছিনিয়ে নিয়ে নিয়ে যান। এ সময় স্লোগান দিতে দিতে দলীয় কার্যালয় এলাকায় অবস্থান নেন।

রউফকে আটকের সময় ঘটনাস্থলে র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কোমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মবিন খান উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা অন্য একজনকে ভেবে তাকে আটক করেছিলাম। পরে তার নাম পরিচয় জানার পর আমরা ছেড়ে দিয়েছি।
ছাত্রলীগ নেতারা তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তৌহিদুল মবিন খান বলেন, ‘এখানে ছিনিয়ে নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে তাকে নিয়ে গেছে।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: