মদপানে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু, সংগঠনের দাবি সড়ক দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম

ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিব (২৭) এর মৃত্যুতে মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সোমবার (২ জানুয়ারি) বেলা ২টা ২০ মিনিটে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাকিবের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। রাকিবুল ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বেলজানি গ্রামের পুলিশ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলামের ছেলে।

ছাত্রলীগের এই নেতার মৃত্যু মদের বিষক্রিয়ায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দাবি, সড়ক দুর্ঘটনায় ওই নেতার মৃত্যু হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগ কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি না দিলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সোমবার (২ জানুয়ারি) রাতে শোক প্রকাশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছ।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ এর যৌথ স্বাক্ষরিত ওই শোক বার্তায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফরিদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম সোমবার বিকেল আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাকিবুল ইসলামের বিদেহী আত্মসার শান্তি কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের এ শোক বার্তার পর বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর শহরে আলোচনা সৃষ্টি হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, রাকিবকে সোমবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে ৪২৭৮৩/২৩ সিরিয়ালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার বন্ধু পরিচয়ে আবির নামে এক তরুণ ভর্তি করে। ভর্তির জায়গায় ‘পুলিশ কেস’ সিল মারা ছিল।

ভর্তি করতে যাওয়া মো. আবির জানায়, বমির প্রবণতা থাকায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এক নারী জানায়, ভর্তি হওয়ার সময় রাকিবুল আবিরকে বলেছিল, ‘মদের সঙ্গে কি খাওয়ালি আমার বুক ও গলা জ্বলে যাচ্ছে।’ এরপর আবিরের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে আবিরের যে মুঠোফোন নম্বরটি দেয়া হয় তাতে ফোন করে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বমির কথা বলে রাকিবুলকে ভর্তি করা হলেও তার সমস্যা ছিল অ্যালকোহল জনিত বিষক্রিয়া। তাকে দ্রুত আইসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানমজীদুল রশিদ রিয়ান বলেন, তার জানা মতে রাকিবুল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। অ্যালকোহলজনিত জনিত মৃত্যুর ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই। তিনি আরও বলেন, রাকিবুলকে তিনি চেনেন না। কেন্দ্র কমিটি অনুমোদন করার সময় তার নাম কলম দিয়ে হাতে লিখে দিয়ে অনুমোদন করা হয়।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সুমন রঞ্জন সরকার জানিয়েছেন, বিষয়টি পুলিশের কাছে না আসায় আমরা তার বিস্তারিত খোঁজ নিতে পারিনি, তবে যেহেতু আলোচনা এসেছে আমরা খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করছি, কেন কিভাবে তার মৃত্যু হল।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: