ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ভোগান্তিতে সেবাপ্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪৯ পিএম

কামরুল হাসান নিরব, ফেনী থেকে: ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ অবদি পর্যন্ত ৬ বছরে ৪ লাখ টাকা বিল বকেয়া থাকায় ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে ইউপির অনলাইন সেবাসহ দাপ্তরিক কাজে চরম বিঘ্ন ঘটছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ইউপির বাসিন্দারা।

ইউনিয়ন পরিষদের প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ঘোপাল ইউপিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিক। তাঁর মেয়াদে ইউনিয়ন পরিষদ ও পরিষদের মসজিদের কোনো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি। ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, শুধু বিদ্যুৎ বিলই বকেয়া নয়, সাবেক চেয়ারম্যান ১৮ মাস মেম্বারদের (ইউপি সদস্য) কোনো সম্মানী দেননি। নতুন চেয়ারম্যান মো. সেলিম চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি শপথ নিয়ে দায়িত্ব নিতে ইউপি অফিসে গেলে সাবেক চেয়ারম্যান সেখানে আসেননি। তিনি সবকিছু বুঝিয়ে না দেওয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান সমস্যাগুলো নিয়ে অবহিত ছিলেন না।

দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মাথায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে বকেয়া সাড়ে তিন লাখ টাকাসহ বিল পরিষদে পাঠালে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান। পরে এ বিষয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলকে অবহিত করেন। চেয়ারম্যান সেলিম জানান, পরিষদসহ উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের মাধ্যমে সাবেক চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে তিনি বিল পরিশোধের বিষয়ে কোনো সাড়া দেননি। সেলিম অভিযোগ করেন,

জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের থেকে নিয়মিত পৌরকর আদায় সত্ত্বেও পরিষদের বিদ্যুৎ বিল কেন বকেয়া রাখা হয়েছিল সে ব্যাপারে তাদের কোনো ব্যাখ্যা দেননি সাবেক চেয়ারম্যান মানিক পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানান তিনি।

সেলিম জানান, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে তিনি অনুরোধ জানিয়েছিলেন বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মুলতবি রেখে তাঁর মেয়াদকালের বিলগুলো নিয়মিত আদায় করতে। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিস বকেয়া বিল প্রতি মাসের বিলের সঙ্গে যোগ করে দেওয়ায় তিনি সেটা পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে তাঁর ১০ মাসের মেয়াদকালসহ ৬ বছরের বিল বকেয়া রয়ে গেছে। পরিষদের তহবিলের কোনো টাকা না থাকায় তিনি এ বকেয়া বিদ্যুৎ বিলসহ মেম্বারদের সম্মানী পরিশোধ করতে পারেননি। এ বকেয়া বিলের কারণে জনগণের কাছে লজ্জায় পড়ে গেছেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিকের মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদক কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি। এ বিষয়ে ইউএনও মৌমিতা দাশ জানান, সরকারি পাওনা পরিশোধ করতে হবে। যিনি বকেয়া করেছেন ওই সময় ইউএনও ছিলেন অন্যজন। তাই সাবেক চেয়ারম্যান পরিষদের টাকা কীভাবে খরচ করেছেন সে বিষয়ে তদন্ত ছাড়া কিছু বলতে পারবেন না।

ছাগলনাইয়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম জানে আলম সমকালকে বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ঘোপাল ইউপির বকেয়া আদায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া তাদের আর কোনো পথ খোলা ছিল না।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: