প্রকৃতিপ্রেমীদের হাতছনি দিচ্ছে শান্ত জলে ভাসা ‘হাউস বোট’

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:০৮ পিএম

নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপরূপ লীলাভূমি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেতে পার্বত্য জনপদের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিয়াসু পর্যটকরা। এই শীতে কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পাহাড়গুলো দূর থেকে দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন সবটুকু উজাড় করে দিয়ে পেখম মেলে বসে আছে। এছাড়াও রয়েছে সবুজ পাহাড়ের চাদরে ঘেরা সুবিশাল কাপ্তাই হ্রদ। হ্রদের শান্ত নীল জল যে কারো হৃদয় শীতল করে দেয়। সেই হ্রদের মধ্যে ডুবে থাকা পাহাড়, পাহাড়ি নদী আর ঝর্ণার জীবন্ত ক্যানভাস।

প্রকৃতিকে কাছ থেকে দেখা এবং এর সৌন্দর্য্যে উপভোগ করতে এবার প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য কাপ্তাই হ্রদের শান্ত নীল জলে ভাসানো হলো সু-সজ্জিত এবং মনোরম বেশ কয়েকটি ‘হাউস বোট’।

এই হাউজ বোটে করে জলে ভেসে প্রকৃতির রূপ ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের হাতছানি দিচ্ছে। সারাদিন জলে ভেসে হ্রদ পাহাড়ের সৌন্দর্যের উপভোগ করে পর্যটকরা রাত্রিযাপনও করতে পারবে এই হাউজ বোটগুলোতে। ভেসে বেড়ান, উপভোগ করুন জল-পর্বতের ব্যাঞ্জনায় অপরূপ সৌন্দর্য। তাই যান্ত্রিক জীবনের নানা কর্মব্যস্ততার ছক থেকে বেরিয়ে এসে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ছুটে আসতে পারেন, রূপের খ্যাত রাঙ্গামাটিতে।

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে বেড়ানোর বেশ কয়েকটি হাউজ বোট রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম দ্য রয়েল অ্যাডভেঞ্চার, প্রমোদিনী, রাঙাতরী, স্বপ্নডিঙ্গি, মাউরুন। ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা দম্পতি মেহেদী ও তানিয়া জানান, প্রকৃতির রূপ ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে তাঁরা রূপের রানী রাঙ্গামাটিতে এসেছেন। কাপ্তাই হ্রদেও জলে ভেসে হাউজ বোটে ঘুরতে তাদের বেশ ভালো লাগছে। কারণ প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য্য কাছ থেকে উপভোগ করতে পেরে খুবই আনন্দিত। এছাড়াও এ হাউস বোটে রাত্রিযাপনের সুযোগও রয়েছে এবং খাবার রেস্টুরেন্টও রয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে ঘুরতে আসএনামুল হক বলেন, তিনি পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। এই ধরণের হাউজ বোট তিনি কাশ্মীরে দেখেছেন। এখন আমাদের দেশে এই ধরণের বোটের সুবিধা থাকায় কাউকে আর বাইরে দেশে যেতে হবে না।

দ্য রয়েল অ্যাডভেঞ্চারের সিইও মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার জানান, রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে এই হাউজ বোটটি তৈরি করেছেন। এখানো মোট আটটি কক্ষ রয়েছে। যার মধ্যে বারান্দাসহ দুটি সুপার প্রিমিয়াম কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষের সাথে রয়েছে ওয়াশরুম। প্রতি কক্ষে চারজন করে রাত্রিযাপন করতে পারবে।

প্রমোদিনী হাউস বোটের স্বত্ত্বাধিকারী দীপাঞ্জন জানান, ২০১৯ সালে প্রথম হাউজ বোটটি হ্রদের জলে নামাই। হাউজ বোটের চাহিদা দেখে একে একে তিনটি হাউজ বোট নামিয়েছেন। আশা করছেন, এই হাউজ বোটগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করবে।

মাউরুন হাউজ বোটের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উচ্ছল চাকমা বলেন, হাউজ বোট হচ্ছে পর্যটনের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনা। এটিকে আরও উন্নয়ন করা হলে পর্যটন ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখবে।

সিএইচটি ট্যুরিজম এন্ড কালচার রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক বিজয় ধর জানান, রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে হাউজ বোট নতুনভাবে সূচনা হয়েছে। আগে যারা হাউজ বোট তৈরি করে কাপ্তাই হ্রদে নামলো তারা বেশ সাড়া পাচ্ছে। এটি রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের জন্য ভালো ভূমিকা রাখবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: