বিদ্যুতের দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে সরকার রেগে যায়: মেনন

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৭ পিএম

বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে সরকার রাগান্বিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মেনন বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুললেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থেকে সরকার পথচ্যুত হয় নাই। তবে অর্থনীতির প্রয়োজন মেটাতে আইএমএফ’র কাছ থেকে ঋণ নিতে গিয়ে তাদের শর্ত পূরণ করতে পাবলিক ইউটিলিটি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিসহ যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে টেনে ধরছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) এড়িয়ে সরকার সম্প্রতি গ্যাসের যে ৮২ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি করেছে সেটি শিল্পখাতকে গভীরভাবে আঘাত করবে সন্দেহ নাই। এই আঘাত শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ওপর এসে পড়বে। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে মূল্য সমন্বয়ের নামে মূল্যবৃদ্ধি ওপরতলার বড়লোকদের জন্য কিছু যায় আসে না।

কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের ওপর এই আঘাত নিদারুণভাবে পড়ছে। এই অংশের মানুষ ইতিমধ্যেই তাদের সংসারের খরচ কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। সরকার যদি এসব সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তবে এসব মানুষদের দৈনন্দিন জীবনযাপনই দুঃসহ হয়ে পড়বে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে এই সংসদে বহু আলোচনা হয়েছে। আমি তার পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। কারণ, এতে সরকার কেবল অস্বস্থিবোধ করে না, রাগান্বিতও হয়। এটা ঠিক যে এই সরকার শতভাগ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এ নিয়ে কোনো জবাবদিহি চাওয়া যাবে না।

সর্বশেষ গতকাল (রোববার) সরকার বিদ্যুৎ আইনের যে সংশোধনী এনেছে, তা এই ক্ষেত্রে জনগণের প্রশ্নের অধিকারকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন আর বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য গণশুনানির প্রয়োজন হবে না। সরকার চাইলেই যেকোনো সময় মূল্যবৃদ্ধি করতে পারবে। এমনিতেই বিইআরসি জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে মূল্যবৃদ্ধি করে আসছিল। এখন সরকারের এই একক ক্ষমতা সরকারকেই দায়িত্বহীন করে তুলবে।

মেনন বলেন, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক সংকটের কারণে সব দেশেই মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। বাংলাদেশ এখনও এই মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। তবে বাজারে যে নিদারুণ ডলার সংকট চলছে তার পরিণতি আমদানি খাতকে আঘাত করছে।

সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী এলসি’র টাকা ব্যাংক পরিশোধ করতে না পারায় রমজানের জন্য আনা দুই জাহাজ পণ্যকে বহির্নোঙরে অপেক্ষা করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনই এই অবস্থা হলে রমজানে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে তা অনুমেয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: