নালিতাবাড়ীর নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:২৪ পিএম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসায় ৬ জন শিক্ষক কর্মচারী পদে সম্প্রতি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক বিভিন্ন পদে ১০৩ জন প্রার্থী আবেদন করেন। অভিযোগ রয়েছে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলী দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েকজন প্রার্থীর কাছে নিয়োগ বাবদ লাখ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। যারা কম টাকা দিয়েছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে বেশি টাকা দাতা প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা করছেন তিনি।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে ফকরুল হাকাম বাবু নামে এক প্রার্থী ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন। এতে বলা হয়, ৭ লাখ টাকার চুক্তিতে অধ্যক্ষ হাতেম আলী কমিটির সভাপতির সম্মতিতে তার কাছে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা নেন। যার স্বাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু তার পরিবর্তে বেশি টাকা পেয়ে অন্যজনকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছেন অধ্যক্ষ। নিরুপায় হয়ে ফকরুল হাকাম বাবু তার টাকা ফেরত পেতে ও অধ্যক্ষ হাতেম আলীর অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিকারসহ নিয়োগ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, হাতেম আলীর ঘুষের টাকা প্রদান করে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন বেকার যুবক ফকরুল হাকাম বাবু। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর আবেদনকারীদের নিযোগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ ধার্য করে আবার অনিবার্য কারণে নোটিশ প্রদান করে সেই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন অধ্যক্ষ হাতেম আলী।

ভুক্তভোগি ফকরুল হাকাম বাবু বলেন, আমার বাসায় এসে অধ্যক্ষ হাতেম আলী ৪ লাখ টাকা নেন। বাকী ১০ হাজার টাকা বিকাশ নম্বরে নিয়েছেন। এরমধ্যে তিনি এক লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকী টাকা দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করেন। তার চাকুরির প্রলোভনে আমি দাবিকৃত ঘুষের টাকা দিয়ে এখন একবারে নিঃস্ব হয়ে পথে পথে ঘুরছি। আমি এর প্রতিকার চাই।

আরো অভিযোগ রয়েছে, ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলী ২০২১ সালে মাদ্রাসার ১৬ একর জমি ইজারা বিক্রির টাকা, মাদরাসার টিনসেড ঘরের পুরোনো টিন, গ্রীল ও দরজা বিক্রির ৭০ হাজার টাকা, ব্যাংক একাউন্টে স য়ের এক লাখ টাকা, পুরাতন বই বিক্রির ৫ হাজার টাকা, কোভিড- ১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামতো শিক্ষক কর্মচারীদের এক দিনের সমপরিমান বেতনের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাত, শিক্ষকদের টিউশন ফি, ছাত্র-ছাত্রীদের সনদপত্র, প্রশংসাপত্র প্রদানের সময় গৃহীত অর্থ রশিদ না দিয়ে আত্মসাতসহ লাখ লাখ টাকা আত্মসাত ও সীমাহীন দুর্নীতি করেন অ্যধক্ষ হাতেম আলী। এসব দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ উপনেতা ও স্থানীয় এমপি বেগম মতিয়া চৌধুরীর কাছে গত বছরের ৩০ মে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক।

এ ব্যাপারে নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলী বলেন, মোজাম্মেল হক ও বাবু আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধের পাঁয়তারা করছেন।
ফকরুল হাকাম বাবু নালিতাবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর গত বছরের ৩১ অক্টোবর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলীর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলেও শিক্ষা আফিসার জাহাঙ্গীর কবির তা অস্বীকার করেছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: